ঢাকা: অনলাইন জুয়া ও হুন্ডি কারবারের অভিযোগ গত ৯ মাসে ২১ হাজার ৭২৫টি অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবস্থানরত আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)।
একই সময়ে সংস্থাটি হুন্ডি সংশ্লিষ্টতা সন্দেহে ২১টি মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠান ও তাদের ৩৯টি অ্যাকাউন্টের তথ্য সিআইডির কাছে পাঠিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তা ছাড়া সব ব্যাংকের বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান ও উপপ্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তাদের সাথে বিএফআইইউ’র প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের বৈঠক পরবর্তী একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চলতি ২০২৩ সালের শুরু থেকে অদ্যাবধি অনলাইন গেমিং, বেটিং, সংশ্লিষ্ট ৩৭১টি; অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং সংশ্লিষ্ট ৯১টি ও ক্রিপ্টোকারেন্সি সংশ্লিষ্ট ৪১৩টি সন্দেহজনক লেনদেন গ্রহণ করেছে যা পর্যালোচনা করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় কাছে পাঠানো হয়েছে। হুন্ডি প্রতিরোধে ২২৯টি মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধ হুন্ডি, গেমিং, বেটিং, ক্রিপ্টো সংক্রান্ত সর্বমোট ৮১৪টি ওয়েবসাইট, ১৫৯টি অ্যাপ এবং ৪৪২টি সোশ্যাল মিডিয়া পেজ চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সরবরাহ করা হয়েছে।
সভায় মাসুদ বিশ্বাস কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ গ্রহণ করে বা নন-ফান্ডেড সুবিধাকে ফান্ডেড সুবিধায় রূপান্তর ও ফোর্সড লোন সৃষ্টি করে বিদেশে অর্থ পাচারসহ বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং/গেমিং/বেটিং, ডিজিটাল হুন্ডি ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা পাচার রোধে ব্যাংকগুলোকে সচেতন হতে তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশে কার্যরত ব্যাংকের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সম্প্রতি উদঘাটিত ঋণ জালিয়াতি করে অর্থ পাচার, বাণিজ্যভিত্তিক মানিলন্ডারিং, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং/গেমিং/বেটিং, ডিজিটাল হুন্ডি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের মাধ্যমে ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। এ সব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
বিএফআইইউ আর্থিক অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনে যাদের বিরুদ্ধে দুর্বলতা পরিলক্ষিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো আর্থিক অপরাধের সাথে ব্যাংক কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ব্যক্তি পর্যায়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো অপরাধী কর্তৃক অসৎ উদ্দেশ্যে, জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নে ব্যাংক যাতে ব্যবহৃত হতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর সাথে সাথে সকল পক্ষকে সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপাশি সংবেদনশীল অঞ্চলসমূহে কার্যরত ব্যাংকের শাখাসমূহের গ্রাহকদের লেনদেন পর্যালোচনা জোরদার করতে হবে। কোনো অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হলে তা সাথে সাথে বিএফআইইউকে জানাতে হবে। যেসব ব্যাংক মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রদান করে তাদের অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করার বিষয়েও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
জেডএ/এমজে