ঢাকা: বিভিন্ন রকমের অনিয়ম ও দুর্নীতির পাশাপাশি নিজেদের লুটপাটের সুবিধা জন্য কোম্পানির প্রধান নিবাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ না দেয়ার ফেঁসে গেলেন বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালকরা।
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শূন্য পদে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার বছর অতিক্রম করার পর সিইও নিয়োগ না করায় চেয়ারম্যানসহ সব পরিচালকে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে বিমা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) কোম্পানির আইডিআরএ’র কার্যালয়ে কোম্পানির সঙ্গে কর্তৃপক্ষের শুনানি অনুষ্ঠানের পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
একই সঙ্গে আগামী ২ মাসের মধ্যে সিইও নিয়োগ দিতে নির্দেশনা দিয়েছে। এসময়ের মধ্যে তা না করতে পারলে কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ দিবে কর্তৃপক্ষ। তখন প্রশাসক ইচ্ছা করলে কোম্পানির র্বোড ভেঙে দিতে পারে। এতে কোম্পানির বর্তমান পরিচালকরা পরিচলক পদ হারাতে পারেন।
আইডিআরএ ও কোম্পানি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, আইডিআরএ নির্দেশনাকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে ৩ বছর ১১ মাস ধরে কোম্পানির সিইও নিয়োগ দেয়নি বায়রা লাইফ। বিমা আইন ২০১০ অনুসারে সিইও পদ শূন্য হওয়ার পর ৩ মাসের মধ্যে সিইও’র শূন্য পদটি পূরণ করতে হয়। কিন্তু কোম্পানির পরিচাকরা যোগ্যব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও সঙ্গেও কোম্পানির প্রধান এই পদটিতে কাউকে নিয়োগ দেয়নি। এ কারণে কেন সিইও নিয়োগ দেয়নি জানতে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ শুনানিতে ডাকে।
শুনানিতে কোম্পনির চেয়ারম্যানসহ একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ একচ্যুয়ারি, তিন সদস্য এবং আইডিআরএ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শুনানিতে কোনো সঠিক কারণ না দেখাতে পারায় বিমা আইনের প্রবিধান ভঙ্গ করায় বিমা আইনের ধারা ১৩০ ও ১৩৪ অনুসারে কোম্পানির সব (মোট ১২) পরিচালককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ২ মাসের মধ্যে সিইও নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছে। তা না হলে বিমা আইন ২০১০ এর ৮০ অনুচ্ছেদের ৫ ধারা অনুসারে কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিআরএ’র সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে জানান, প্রবিধানে সিইও নিয়োগের বিধান রয়েছে, সেই বিধান ভঙ্গ করায় বায়রা লাইফের সব পরিচালকে জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ২ মাসের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তিকে সিইও হিসেবে নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ না দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কোম্পানির সঙ্গে আইডিআরএ’র শুনানি শেষ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দু’এক দিনের মধ্যে কোম্পানিকে এবিষয়ে চিঠি দেয়া হবে।
সিইও নিয়োগ না করায় শুনানি শেষে সব পরিচালদের জরিমানা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল বাশার। তিনি বাংলানিউজ বলেন, আইডিআরএ’র শুনানিতে শুধু আমাদের কাছ থেকে কারণগুলো শুনেছেন। কিন্তু বিচারের সময় এসব আমলে নেননি।
তিনি বলেন, এমডি হিসেবে যোগ্য এমন ৫জন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য আইডিআরএকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তাদের মনের মতো না হওয়ায় নিয়োগের জন্য অনুমোদন দেয়নি। তারপরও আমাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় আরো কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা ক্রমাগতভাবে ব্যবসার তুলনা ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় কমাতে শুরু করেছি। আশা করছি, আগামী বছর গুলোতে ব্যবস্থাপনা ব্যয় কমে আসবে।
এ ছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কোম্পানি লাভে আছে। একচ্যুয়ারি সংকটে এতোদিন পুঁজিবাজারে আসার আগে যে ভ্যালুয়েশন করা দরকার ছিলো তা করতে পারিনি। তবে সাধারণ বিমার চেয়ারম্যান সোহরাব উদ্দিন একচ্যুয়ারি সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি পুঁজিবাজারে আসতে কোম্পানির প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করবেন। এরপরই প্রয়োজনীয় সব কাজ করে আমরা পুঁজিবাজারে আসার জন্য আবেদন করবো।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৬ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
এমএফআই/এসএইচ