ঢাকা: পল্লী এলাকার দারিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সঞ্চয়, অর্জিত অর্থ লেনদেন ও রক্ষণাবেক্ষণ, ঋণ ও অগ্রিম প্রদান এবং বিনিয়োগের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যে এ প্রকল্পের কর্মীদের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
সূত্র বলছে, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসার পর ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প ফের চালুর ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। যার কার্যক্রম শুরু হয় ২০১০ সালের অক্টোবরে।
প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল জনগোষ্ঠী উপকৃত হওয়ায় এটিকে ব্যাংকে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার।
দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের স্থায়ী রূপ হচ্ছে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’।
২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের এক অনুষ্ঠানে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে জাতীয় সংসদের তৎকালীন সিনিয়র সচিব আশরাফুল মকবুল স্বাক্ষরিত ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ আইনের এ গেজেট ২০১৪ সালের ৮ জুলাই সংসদে পাস হয়।
পরে চলতি বছরের ২২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
একই সঙ্গে চালু করেন ব্যাংকের ১০০ শাখা। পরবর্তীতে বাকি ৩৮৫ শাখায় কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
প্রায় ৩ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা ব্যায়ে দেশের ৪৮৫ উপজেলার ৪ হাজার ৫০৩ ইউনিয়নে ৪০ হাজার ৫২৭ গ্রামে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। যার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) উপজেলা কার্যালয়।
এতে কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় ৭ হাজার কর্মী। যারা গ্রামে হাস-মুরগি, পশু পালন, মৎস্য চাষ ও নার্সারির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সঞ্চয় সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের পর্ষদ সভায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের কর্মীদের ব্যাংকে নিয়োগের প্রস্তাবটি উথাপন করা হবে। সর্ব সম্মতিক্রমে তা পাস হলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে।
যদিও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইনেই একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিলুপ্ত প্রকল্পের নিয়ম ও শর্তানুযায়ী ব্যাংকে বদলি করে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আগের নিয়মে বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা বলা আছে।
‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের ৩০ জুন। আইন অনুযায়ী আগস্ট মাস থেকেই প্রকল্পের কর্মীদের বেতন ও ঈদুল আজহার বোনাস দেওয়া হয়েছে ব্যাংক থেকে।
এ দিকে নিয়োগের সম্প্রতি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেছেন প্রকল্পের কর্মীরা। যাকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. মঈন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আগামী পর্ষদ সভায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কর্মীদের নিয়োগের প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হবে। এরপরই নিয়োগের পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে।
‘এ জন্য গঠিত নিয়োগ কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবে। ’
তবে যাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ আছে তাদের অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে বলে জানান মো. মঈন উদ্দিন।
দেশের প্রতিটি বাড়ি খামারে রূপান্তরিত করে বহুমুখী সম্ভাবনার দখিনা দ্বার খুলে দিতে ১৯৯৬ সালে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প নেয় আওয়ামী লীগ সরকার।
কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সেটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এলে ফের প্রকল্পটির চালু করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬
এসই/এমএ