এ বছর সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে লক্ষ্যমাত্রার ৪৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
তবে, চলতি বছর শেষে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি ঋণ বিতরণ হবে।
এদিকে একই সময়ে বিদেশি মালিকানার নয়টি ব্যাংকের মধ্যে তিনটি ব্যাংক কৃষিখাতে এক টাকাও বিতরণ করেনি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, এ অর্থবছর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক, দুইটি বিশেষায়িত, ৩৮টি বেসরকারি ব্যাংক ও নয়টি বিদেশি ব্যাংককে ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বেধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জুলাই-ডিসেম্বর মাসেই লক্ষ্যমাত্রার ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আট ব্যাংক ৪ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে।
কৃষিখাতে বিতরণের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। গত বছর একই সময়ে সরকারি ব্যাংকগুলো এ খাতে ঋণ বিতরণ করেছিল ৪ হাজার ৬৫৬ দশমিক ৫০ কোটি টাকা। সেই হিসেবে এ সময় ঋণ বিতরণ সামান্য কমেছে।
এছাড়া দেশি-বিদেশি মালিকানার বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো উল্লেখিত সময়ে ৫ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ করেছে। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ শতাংশ।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে চলতি বছর মোট ৮ হাজার ২৬০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। গত বছর একই সময়ে এ খাতে মোট লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ (৪০৯৯ কোটি টাকা) বিতরণ করেছিল সরকারি ব্যাংকগুলো। সেই হিসেবে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৬ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বিভিন্ন কারণে ব্যাংকগুলো অন্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারছে না। আর সামগ্রিকভাবে ব্যাংকখাতে সুদে হার কমে আসায় ব্যাংকগুলো কৃষিতে আগ্রহ দেখানোয় ঋণ বিতরণ বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যার মধ্যে সোনালী ব্যাংক ও ডিবিবিএল বেশি পিছিয়ে। ব্যাংক দুটি কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে লক্ষ্যমাত্রার যথাক্রমে ৬ ও ৩০ শতাংশ।
এছাড়াও নতুন ব্যাংকগুলোও কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণে পিছিয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটি কৃষিখাতে মাত্র ২৪ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। যা ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৩ শতাংশ।
এ সময় মেঘনা ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ছয় দশমিক ১৩, মধুমতি ব্যাংক এক দশমিক ৯, ইউনিয়ন ব্যাংক দশমিক ৮০, এনআরবি গ্লোবাল ২০ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক ২৮ শতাংশ ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ২৩ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। এছাড়া বিদেশি মালিকানা ব্যাংক আল ফালাহ্, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান কৃষি খাতে কোনো ঋণই বিতরণ করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি: ২৩, ২০১৭
এসই/জিপি/পিসি