সীমা লঙ্ঘনের শীর্ষে রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক। পরের অবস্থানেই রয়েছে যথাক্রমে বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও দেশের বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদ হারের ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। এজন্য ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত সীমার বাইরে থাকা ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েও স্প্রেড কমানোর দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৪টি ব্যাংককে ২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, ৬টি ব্যাংককে ৩০ অক্টোবর, একটি ব্যাংককে ৩০ নভেম্বর ও দু’টি ব্যাংককে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পার হলেও ১৫টি ব্যাংকের স্প্রেড এখনও ৫ শতাংশের বেশি রয়েছে।
জানা গেছে, সুলভ বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঋণের সুদহার এক অঙ্কের ঘরে নামানোর দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবির ভিত্তিতে ঋণের সুদহার কমাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরই অংশ হিসেবে কয়েক মাস আগে ‘স্প্রেডকে’ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে যে সব ব্যাংকের স্প্রেড সীমা অতিক্রম করবে তাদের ক্যামেলস রেটিং নেতিবাচক হওয়ার আশংকা রয়েছে।
তবে সার্বিকভাবে আমানতের সুদের পাশাপাশি ঋণের সুদহার কমতে থাকায় ব্যাংকিং খাতে ২০১৭ সালের জানুয়ারির শেষে গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের মাস ডিসেম্বরে যা ছিল ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ মাসে ঋণের গড় সুদহার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। যা ডিসেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ মাসে আমানতের গড় সুদ দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। যা অক্টোবর মাসে ছিল ৫ দশমিক ২২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে রূপালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, সিটি ব্যাংক এনএ, উরি ব্যাংক ও এইচএসবিসি’র স্প্রেড নির্ধারিত সীমার বাইরে রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের।
স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের স্প্রেড ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। রূপালী ব্যাংকের স্প্রেড ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৮০শতাংশ, উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ ও এনআরবি ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। এছাড়াও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের স্প্রেড ৫ দশমিক ০১ শতাংশ, উরি ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ, এইচএসবিসির ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ ও সিটি ব্যাংক এনএর ৫ দশমিক ২২ শতাংশ স্প্রেড রয়েছে।
এদিকে জানুয়ারি মাসে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর। আর সবচেয়ে কম স্প্রেড বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর। বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ, রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। আর বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৪ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭
এসই/ইইউডি/এমজেএফ