ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ব্যাংকিং

ঋণ ও আমানতের সুদহার ব্যবধানের শীর্ষে ব্র্যাক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
ঋণ ও আমানতের সুদহার ব্যবধানের শীর্ষে ব্র্যাক .

ঢাকা: ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না দেশি-বিদেশি ১১টি ব্যাংক। ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধানের (স্প্রেড) শীর্ষে রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

পরের অবস্থানে রয়েছে বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকটির ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৮.০৮ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ব্যাংকগুলোর পরিচালনা খরচ কম হওয়ায় তাদের স্প্রেড বরাবরই কিছু বেশি থাকছে। তবে দেশীয় ব্যাংকগুলোর এমন আচরণ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ব্যাংকগুলো স্বল্প সুদে আমানত পাওয়ায় অতিরিক্ত মুনাফা লাভের সুযোগ পাচ্ছে।

আমানতের সুদহার কমিয়ে ঋণের সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে আমানতকারীদের ঠকানো হচ্ছে বলে মনে করেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আমিন।

তিনি বলেন, ডিপোজিট রেট কমানো ও লেন্ডিং রেট বাড়ানোর ইরেগুলারিটির বিষয়টি যত্নে সঙ্গে দেখা উচিত। আমাদের আমানতকারী যেমন প্রয়োজন তেমনি লেন্ডিং করাও প্রয়োজন। এ দুটি বিষয়ের মধ্যে আন্তঃভারসাম্য বজায় রাখতে কাজ করা উচিত ব্যাংকগুলোর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান ৫ শতাংশের বেশি রয়েছে এমন ব্যাংকগুলো হলো— ডাচ বাংলা ব্যাংক ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, ব্র্যাক ব্যাংকের ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ, উত্তরা ব্যাংকের ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৫ দশমিক ১ শতাংশ। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ৮.০৮ শতাংশ।  

এইচএসবিসি ব্যাংক ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ, সিটি ব্যাংক এনএ’র ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ, উরি ব্যাংকের ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

স্প্রেড সীমা অতিক্রম করা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পুরোপুরি লঙ্ঘন। এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট (ডিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এচই মনসুর বলেন, ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড কম হওয়ার কারণে লেন্ডিং রেট অতিরিক্ত বেশি না হওয়া সত্ত্বেও সেটা আমি অ্যাক্সেপ্ট করে নিতে পারি ‘অ্যাজ এ ইফিসিয়েন্সি’ তাদের প্রফিট বেশি হবে। কারণ লেন্ডিং রেটের ক্ষেত্রে তারা ডিসকাউন্ট করবে না। বাজারে যে লেন্ডিং রেট প্রচলিত আছে সেটাই তারা নেবে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল।

আমানতের গড় সুদহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়া এবং ঋণের গড় সুদহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি উদ্ধেগজনক এবং চলতি বছরের ১ ফ্রেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডির জারি প্রজ্ঞাপনের পরিপন্থি।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা যেসব ব্যাংক মানবে না খোঁজ-খবর নিয়ে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে রাখতে এ বছরই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কারা মানছে না তা খতিয়ে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
এসই/এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।