২০১৫ সালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে প্রধান করে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুই বছর মেয়াদী উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়।
এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) প্রণীত তৃতীয় পর্বের মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন (এমই) প্রতিবেদন কমিটিকে ১১টি কৌশল নির্ধারণ করে দেয়।
মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে প্রণীত জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৫-১৭ মেয়াদের কমিটিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), এনজিও ব্যুরো, মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্টাল গার্ড, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিনিধি রয়েছেন।
সম্প্রতি সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে সভার কার্যপত্রে বিষয়টি উথাপন করা হয়। সেখানে জানানো হয়, ৩১টি অ্যাকশন আইটেম এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
বাস্তবায়ন না হওয়া ৩১ টি অ্যাকশন আইটেমের মধ্যে রয়েছে, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার, মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন অপরাধের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার, বিভিন্ন সংস্থার ডাটাবেইজ থেকে বিএফআইউরি তথ্য প্রাপ্তি, কোম্পানি রেজিস্টেশন ও কোম্পানি আইন সংশোধন।
এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) প্রণীত তৃতীয় পর্বের ওই মিউচ্যুয়াল ইভালুয়েশন (এমই) প্রতিবেদনের সুপারিশসমূহের কার্যক্রম ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এপিজিকে দিতে হবে। প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই ২০১৮ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠেয় এপিজির বার্ষিক সভায় বাংলাদেশের উন্নয়ন বা নিয়মিত অনুসরণ নির্ধারণ করা হবে।
৩১ অ্যাকশন আইটেম বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিধিমালার ত্রুটির কথাও তুলে ধরেন কমিটির দু’একজন সদস্য। তারা বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৯(২) ধারার বিধান মোতাবেক উক্ত আইনে বর্ণিত অপরাধসমূহের বিচারের জন্য বিশেষ জজ নিয়োগ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর ২৮(১) ধারার বিধান মোতাবেক উক্ত আইনে বর্ণিত অপরাধ বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আবু হেনা মোহা. রাজি হাসান বলেন, জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৫-১৭-এর অবাস্তবায়িত অ্যাকশন আইটেমসমূহ বাস্তবায়নের সময় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮-২০ মেয়াদে আবার কৌশলপত্র গ্রহণ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অবাস্তবায়িত অ্যাকশন আইটেমগুলো বাস্তবায়ন করা থাকলে আমাদের জন্য ভালো হতো। এ বিষয়ে এপিজি কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পেতো না। আমাদের অগ্রগতির বিষয়টিও স্পষ্ট হতো।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭
এসএইচ/ এমএইউ/