ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ব্যাংকিং

সুদ কমলে বিনিয়োগ বাড়বে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
সুদ কমলে বিনিয়োগ বাড়বে

ঢাকা: বিনিয়োগের জন্য কম সুদের বিকল্প নেই। ঋণের সুদ যত কম হবে, বিনিয়োগ তত বাড়বে। দুইমাস আগেও আমানত সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ বৃদ্ধি করায় অঘোষিতভাবে এক প্রকার থমকে ছিল বিনিয়োগ।

আগামী ১ জুলাই থেকে ঋণের সুদহার এক অংকের ঘরে আসলে আবারও বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
 
সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালেও অনেক গ্রাহক এক অঙ্কের সুদে ঋণ পেলে এখন তা ১৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

বিষয়টি নজরে আসায় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের যৌথসভায় ঋণের সুদ হার এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন।  এর আলোকে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি সম্প্রতি এক বৈঠকে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
 
সম্প্রতি একটি বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির সাংবাদিকদের বলেছেন, ১ জুলাই থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা শুরু হলে বিনিয়োগ আগের চেয়ে নতুন অর্থবছরে অনেক বেড়ে যাবে।
 
আরও পড়ুন>>
** 
ব্যাংকঋণে সুদহার কমায় আশা জাগছে আবাসনে

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করছি বিনিয়োগ বাড়াতে। ১ জুলাই থেকে বেসরকারি ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করবে। আমরা আশা করছি এতে বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন অব্যহত থাকবে।
 
ঋণের সুদ কমানোর জন্য সরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গেও গত ২০ জুন সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।  

বৈঠকে সরকারি ব্যাংকগুলোও এক অংকের সুদে ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কম সুদে ঋণ বিতরণের জন্য ওই সময় আমানতের সুদ যাতে ন‍া বাড়ে সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।
 
এবিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এডিআর (অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও) হার কমানোয় জরিমানা দেওয়ার ভয়ে ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহ কমিয়ে দিয়েছিল। তখন ডিপোজিট রেট বেড়ে যায়। পরবর্তীতে নগদ জমা সংরক্ষণ সিআরআর) এক শতাংশ কমানোর ফলে ১০ হাজার কোটি ব্যাংকগুলোর কাছে যাওয়ার ফলে কম সুদে ঋণ বিতরণ সম্ভব হবে।
 
তিনি আরও বলেন, আমানত সংগ্রহ করতে ব্যাংকগুলোতে স্পেশাল স্কিম চালু করতে হবে, যাতে টাকা দীর্ঘদিন ব্যাংকের কাছে থাকে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি টাকা নেই। দীর্ঘমেয়াদে আমানত সংগ্রহ করার জন্য গ্রাহককে আকর্ষণীয় ইন্টারেস্ট দিতে হবে। তাহলে বাজার টেকসই হবে। কমসুদে বিনিয়োগ করা যাবে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ঋণের সুদ কমানো ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর। তবে এই সুযোগে যেন মেশিনপত্র আমদানির নামে বিদেশে অর্থপাচার না হয়। সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে এর সুফল প‍াবে দেশবাসী। কর্মসংস্থান বাড়বে মানুষের।
 
তবে খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, শুধু ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমালেই হবে না। বিনিয়োগের জন্য সরকারি উদ্যোগগুলোর বাস্তবায়ন দরকার। প্রকৃত উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত বিতরণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
এসই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।