সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসী আয় ও রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় এখনই কমছে না ডলারের দাম। আর বিদ্যমান তারল্য সংকটের মধ্যে বেশি দামে ডলার কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে।
যোগাযোগ করা হলে বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশে আরও অনেকগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে।
‘পাশাপাশি নতুন এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি এবং জ্বালানি আমদানি করতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। মূলত আমদানি বেড়ে যাওয়াই এর মূল কারণ,’ বলেন ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কাছে ২৩১ কোটি মার্কিন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই অর্থ বছরে আমদানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। এ সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ আর রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রবাসী আয় ও রপ্তানির পরিমাণ আমদানির অংক অতিক্রম করতে পারেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, পদ্মা সেতুর নির্মাণ সরঞ্জামাদি আমাদানি, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়ন করতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।
তবে এসেব প্রকল্পের সুফল পাওয়া শুরু হলে রপ্তানি আয়ও বাড়বে। তখন ডলারের দাম কমে যাবে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, সরকার পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এতে বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সুফল পাওয়া শুরু হলে আমাদের আমদানির তুলনায় রপ্তানি আবার বেশি হবে। তখন ডলারের দাম ফের কমতে শুরু করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, দেশীয় ব্যাংকগুলো এক সময় বৈদেশিক মুদ্রয় ঋণপত্র খুলে কমিশন থেকে মুনাফা করলেও এখন এই ঋণের দায় মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খুব দ্রুতই বেড়েছে ডলারের দাম।
সরকারের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে ডলারের দাম সহসাই কমছে না। তবে ডলারের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে যদি উচ্চভিলাষী পণ্য আমদানির লাগাম টেনে ধরা যায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম হওয়ায় ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে। আমদানি করা যন্ত্রপাতি দিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে আমরা আবার রপ্তানি বাড়াতে পারবো। এ ধরনের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি আমাদের জন্য শুভ লক্ষ্মণ।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮
এসই/এমএ