দেশের সব ভূমি অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে প্রত্যেক ব্যক্তির তথ্য এই ভাণ্ডারে অর্ন্তভুক্ত করা হবে। এটি করা হলে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে তথ্যভাণ্ডারে সার্চ করলে সহজেই বেরিয়ে আসবে আবেদনকারীর বিস্তারিত তথ্য।
এজন্য জেলা ও থানাভিত্তিক ৫৮ হাজার মৌজার তালিকা, ৫০০ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের জমি ও ভূমি বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য, ডোমেইন টেবিল ও অন্যান্য ডোমেইন টেবিল চূড়ান্ত করার কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে জামানতের তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তথ্যভাণ্ডারের সিস্টেমে আপলোড করে ‘কোল্যাটেরাল-সিকিউরিটি ইনফরমেশন সিস্টেম’ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করবে।
ঋণগ্রহণে জামানত সংক্রান্ত সামগ্রিক এই তথ্যভাণ্ডার করা হলে বিদ্যমান আইনের আওতায় ব্যাংক ও অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ ও অগ্রিমের বিপরীতে জামানত সংক্রান্ত প্রতারণা ও দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো থেকে কোল্যাটেরাল-সিকিউরিটি ইনফরমেশন সিস্টেম উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ, সফটওয়্যার রিকয়্যারমেন্ট অ্যানালাইসিস, সিস্টেম আর্কিটেকচার ডিজাইন, ডেটাবেইজ ডিজাইন এবং সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টের কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই তথ্যভাণ্ডারে অর্ন্তভুক্ত করার লক্ষ্যে দেশের জেলা ও থানাভিত্তিক প্রায় ৫৮ হাজার মৌজার তালিকা সম্বলিত ডোমেইন টেবিল প্রস্তুতকরণের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধন অধিদপ্তর হতে প্রায় ৫০০ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের জমি বিক্রয় সংক্রান্ত দলিলাদির তথ্য সম্বলিত ডোমেইন টেবিল ও অন্যান্য ডোমেইন টেবিল চূড়ান্ত করার কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন করা হয়েছে।
পুরো তথ্য সংগ্রহ করার পর দেশে কার্যরত সকল ব্যাংক ও আর্থিক জামানত সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে এই ডোমেইন টেবিলের তথ্যও জামানত তথ্যভাণ্ডারে ইনপুট দেওয়া হবে। ইনপুট দেওয়ার পর সফটওয়্যারটি সিস্টেম ডেপ্লয় করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ হতে জামানতের তথ্য সংগ্রহ করে সিস্টেমের পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে।
সংগৃহীত তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিস্টেমে আপলোড করে কোল্যাটেরাল-সিকিউরিটি ইনফরমেশন সিস্টেম আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করা যাবে। যা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্তভাবে শুরু হবে।
এই তথ্যভাণ্ডারের কার্যক্রম শুরু হলে অতীতে বন্ধক দেওয়া কোন জামানত নতুন করে বন্ধক দিতে গেলে গ্রহীতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে তল্লাশি করলে এক নিমিষেই তা কম্পিউটারের মনিটরে ভেসে উঠবে। এই জামানত আর কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক দেওয়া হয়েছে উঠে আসবে সেই নাম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটি অসাধু চক্র একই জামানত বন্ধক দিয়ে একাধিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছে। এখন আর সেগুলো ফেরতও দিচ্ছে না। তাই জালিয়াতি রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নতুন এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
এসই/এমজেএফ