ঢাকা: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে দেওয়া স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, নিজে যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার তার এই অসামান্য অবদানের জন্য বীর উত্তম খেতাব দিয়েছে।
জাতি গঠনেও জিয়াউর রহমানের অসামান্য অবদান ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক দলীয় শাসন ব্যবস্থার জায়াগায় তিনি বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। উৎপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতি চালু করেছেন। মুক্তবাজার অর্থীতির পথ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটা শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, এসব অবদানের জন্য ২০০৩ সালে মন্ত্রীসভা কমিটি বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশেষ অবদানের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যা এখনো জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক প্রবর্তন করেছিলেন স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে সৌর্য-বীর্য ছাড়া আর কোনো ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি কাউকেই রাষ্ট্রীয় কোনো খেতাব, পদকে ভূষিত করা আওয়ামী লীগ সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছিলো।
ফখরুল বলেন, একাডেমিক অনার ছাড়া বিদেশ থেকে কোনো সম্মাননা অর্জনকেও রাষ্ট্রপতির প্রাক অনুমোদনের শর্ত যুক্ত করেছিলো তারা। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় সম্মাননার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এবং ১৯৭৭ সালে দেশে স্বাধীনতা পদক ও ২১ শে পদক প্রবর্তন করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার সরকার ২০০৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউরর রহমানকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে। এটি ছিলো বাংলাদেশে রাজনীতির পরম উদারতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ বৈধভাবে নির্বাচিত সরকারের দেওয়া সম্মাননা বর্তমান বিতর্কিত আওয়ামী লীগ সরকার বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যিনি পদক প্রবর্তন করলেন, তার পদক প্রত্যাহার করা যে কত নোংরা ও আত্মঘাতী কাজ- তা আওয়ামী লীগ যেদিন বুঝবে, সেদিন আর শোধরাবার সুযোগ থাকবে না।
ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দলীয় মূল্যায়ন আমরা সকলেই জানি। কিন্তু দলীয় মূল্যায়নে রাষ্ট্র চলে না। রাষ্ট্র সকলের। এ রাষ্ট্রকে যদি দলীয় বানাতে চান, তাহলে রাষ্ট্র থাকবে- দলই থাকবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশা করবো শনিবার (২৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেবেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি ফিরে আসবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
এজেড/এটি