ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

অরফানেজে নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ১২ জানুয়ারি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৭
অরফানেজে নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ১২ জানুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নতুন একজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণে প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আগামী ১২ জানুয়ারি ৩২তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান কর্মকর্তা নূর আহমেদ।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন ফের পিছিয়ে একই দিন (১২ জানুয়ারি) পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) খালেদা জিয়ার আবেদনে চ্যারিটেবলে চতুর্থবারের মতো অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে এবং অরফানেজে নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন এ দিন ধার্য করেন রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দারের অস্থায়ী আদালত।

আদালতটিতে চলছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম।

দু’টি মামলায় হাজিরা দিতে সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে আদালতে পৌঁছেন খালেদা জিয়া। আদালতের কার্যক্রম শেষে দুপুরে বাসায় ফেরেন তিনি।

চ্যারিটেবল মামলায় ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর লিখিত বক্তব্য পড়তে শুরু করেন খালেদা। বৃহস্পতিবার অসমাপ্ত বক্তব্য পাঠের দিন ধার্য ছিল। তবে তার আইনজীবীরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে করা আবেদন শুনানির অপেক্ষায় থাকার কথা উল্লেখ করে সময়ের আবেদন জানান। এক সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী ১২ জানুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করেন আদালত। এর আগেও আরও তিনবার আবেদন জানিয়ে দিন পিছিয়ে নিয়েছেন খালেদা।

এরপর অরফানেজ মামলায় তার আত্মপক্ষ সমর্থন শুরুর কথা থাকলেও নতুন ওই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন জানান খালেদার আইনজীবীরা। আদালত সেটিও মঞ্জুর করে একই দিন ধার্য করেন।

চ্যারিটেবল মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান।

অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় এর আগে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩১ জন সাক্ষী।

খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দল ও ২০ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।

আসামিপক্ষে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, আব্দুর রেজ্জাক খান, এজে মোহাম্মদ আলী, সানাউল্লাহ মিয়া, মোহসীন মিয়া, বোরহান উদ্দিন, নূরুজ্জামান তপন ও রেজাউল করিম সরকার মামলার বিভিন্ন ধাপ পরিচালনা করেন।

দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।

আর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ফজলুল হক মিলন, বিলকিস জাহান শিরিন প্রমুখ। ২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন এনডিপির গোলাম মোর্তুজা ও ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা রাকিবুল ইসলাম।

চ্যারিটেবল মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।

জামিনে থাকা দুই মামলার আসামিরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমানের পক্ষে হাজিরা দেন তার আইনজীবী।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।