এমনকি সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য শহরের কোথাও অস্থায়ী কার্যালয়েরও ব্যবস্থা করতে পারেনি বেশ কয়েকবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা দলটির গুরুত্বপূর্ণ এ ইউনিট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের নির্দেশে কার্যালয় ভাঙার পর দলটির জেলা ইউনিটের কার্যক্রম দলটির নেতাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচালিত হয়।
দলীয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য কোনো অস্থায়ী কার্যালয় নেই। দলের নেতা-কর্মীদের কোনো সভা সমাবেশ হলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নিচেই সম্পন্ন করা হয়।
যদিও বেশির ভাগ সময়ই পুলিশের বাধায় ও ভয়ে-আতঙ্কে হাতেগোনা কিছু কর্মসূচি সেখানে করতে পেরেছে দলটি। প্রথমে দলটির জেলা শাখার সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মাক্স সোয়েটার্সে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো হতো।
সেখানে বসেই দলের কয়েকজন নিজের অনুগত নেতাকে নিয়ে বৈঠক করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেন সভাপতি। কিন্তু এখন সেখানে কেউ যান বলে জানা গেছে।
জানা যায়, নতুন বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালের মার্চে শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ ওই ভবনে থাকা দোকান মালিকদের অন্যত্র সরে যেতে নির্দেশনা দেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)।
অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরে গেলেও এ ভবন ভাঙার বিরুদ্ধে আদালতে যায় জেলা বিএনপি। তবে আদালতের রায় নাসিকের পক্ষে যাওয়ায় গত মার্চে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, ভবন ভাঙার পর জেলা বিএনপির নেতারা নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর সঙ্গে দেখা করে অস্থায়ী কার্যালয়ের জন্য জায়গা দেখতে বলেন। কিন্তু দীর্ঘ আটমাসেও অস্থায়ী কার্যালয়ের জন্যও কোনো জায়গা ঠিক করতে পারেননি বিএনপির স্থানীয় নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, কার্যালয় না থাকায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বসে এক হয়ে কোনো কথা বলতে পারছি না আমরা। এ বিষয়ে নেতাদেরও কোনো উদ্যোগ দেখছি না।
যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘দায়িত্বে থাকাকালে এ কার্যালয়টি আগলে রেখেছিলাম। হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ’
কার্যালয়বিহীন এ অবস্থার জন্য দলটির হাই কমান্ডকে দায়ী করে বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এ উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা দলের দুঃসময়ে অন্য দলে চলে যায়, তাদের হাতেই নেতৃত্ব তুলে দিয়েছেন হাইকমান্ড। এজন্য তারাই দায়ী। ’
কার্যালয় না থাকায় দলের সাধারণ কর্মী-কমর্থকরা ক্ষুব্ধ জানিয়ে তিনি বলেন, নেতারা ঘরে বসে দলীয় কাজ করেন-এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মনে রক্তক্ষরণ হয়।
‘বিএনপি তো কারও ঘরে বন্দি দল না, তাই দলটির একটি কার্যালয় অবশ্যই দরকার। এজন্য কেন্দ্রীয় হাই কমান্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করছি,’ বলেন তৈমুর আলম খন্দকার।
তবে ‘আপাতত কার্যালয় নেওয়ার ব্যাপারে কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই’ বলে জানিয়েছেন দলটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ।
বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন ভবনের কাজ শেষ হলে কর্তৃপক্ষ দ্রুতই কার্যালয়টি বুঝিয়ে দেবেন বলেই আমরা প্রত্যাশা করছি। ’
নাসিক সূত্র বলছে, ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকার ওই জায়গায় নতুন ভবন নির্মিত হলে আগের পজিশন অনুযায়ী দ্বিতীয় তলাতেই জেলা বিএনপির কার্যালয় থাকবে।
ন’তলা ভবনের চারতলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলবে; আর বাকি তলাগুলোতে থাকবে আবাসিক ফ্ল্যাট।
বাংলাদেশ সময়: ০০১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
জিপি/এমএ