ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য বানোয়াট-ভিত্তিহীন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৮
সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য বানোয়াট-ভিত্তিহীন বিএনপি নেতাদের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিএনপির ৮ সিনিয়র নেতাসহ ৯ জনের ব্যাংক একাউন্ট থেকে সন্দেহজনক লেনদেনের যে তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রকাশ করেছে তা বানোয়াট, মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্যেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।

সন্দেহজনক লেনদেনে দুদক যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে তারা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির চার সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মির্জা আব্বাস, দুই জন ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও এম. মোর্শেদ খান, যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল, আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল ও এম. মোর্শেদ খানের ছেলে ফয়সাল মোর্শেদ খান।

মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দুদকের বক্তব্যে আমার নাম জড়ানো হয়েছে। আজ যখন আমাদের নেত্রীকে একটি মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তার জামিন বিলম্বিত করা হচ্ছে। অন্যদিকে দলের মহাসচিব অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। এমন সময় দুদক কর্তৃক বানোয়াট, মিথ্যা কল্পকাহিনী প্রচার করা হয়েছে। দলের সিনিয়র নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে তারা হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

২১ কোটি টাকার একাউন্টের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তার ওপর চালেঞ্জ করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকে আমার এবং আমার পরিবারের কারও কোনো অ্যাকাউন্ট নাই। দুদক যে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে আমি দুদককে অনুরোধ করবো কোন একাউন্টে, কোন ব্রাঞ্চে, কবে কখন কত টাকা উত্তোলন হয়েছে; এমনকি কত টাকা স্থীতি আছে তা বিস্তারিত প্রকাশ করা হোক।

ড. মোশাররফ বলেন, এর আগেও সরকার খালেদা জিয়াসহ আমাকে জড়িয়ে নানা কল্পিত সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছিল। তখন আমার নামে বলা হয়েছিল সিংগাপুরে নাকি আমি ৫ তারকা হোটেলের শেয়ার হোল্ডার। এখন অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের তথ্য পাওয়া যায়। অথচ তারা তা দেখাতে পারেনি। এদিকে বাংলা ইনসাইডারে বলা হয়েছে গোয়েন্দা রিপোর্টের তথ্যমতে ১৭ মার্চ তারা রিপোর্ট প্রকাশ করে। সোমবার দুদক থেকে গণমাধ্যমকে একই ধরনের একটা হ্যান্ডনোট দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে বিএনপির ৮ জন সিনিয়র নেতাসহ ৯ জনের ব্যাংক একাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

বাংলা ইনসাইডার কারা চালায় এমন প্রশ্ন তুলে খন্দকার মোশাররফ বলেন, কে এর মালিক? তারা ১৭ মার্চ এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। গোয়েন্দা সংস্থা কেন দুদককে আগে তথ্য না দিয়ে বাংলা ইনসাইডারকে তথ্য দেবে? বাংলা ইনসাইডারকে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে দুদক ও প্রধানমন্ত্রীকে মিসগাইড করেছে। দুদকও গতকাল বলেছে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে এ তথ্য এসেছে আবার বাংলা ইনসাইডারেও একই তথ্য লেখা হয়েছিল।

এ সময় নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমার নামে ৭ কোটি টাকার তথ্য দিয়েছে বাংলা ইনসাইডার ও দুদক। এটা একটা নোংরা রসিকতা। বাংলা ইনসাইডার কাদের প্রতিষ্ঠান তা আমরা বুঝি না। তারা কি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিষ্ঠান, যে তারা গোয়েন্দা সংস্থার আগে রিপোর্ট পায়। নাকি সরকারের কোনো সংস্থা, যে সরকারের নির্দেশে গোয়েন্দারা তাদের রিপোর্ট দেয়। এটা বড় বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, বাংলা ইনসাইডারের নামে মিথ্যা কল্পকাহিনী বানানোর কারখানা ব্যবহার করে এবং দুদককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আমাদের ঐক্যকে বিনষ্ট করা যাবে না। একই সঙ্গে বাংলা ইনসাইডারকে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রকাশে ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার সমস্ত ব্যাংক লুট করে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে মিথ্যাচার করে তা প্রচার করছে। আওয়ামী লীগ বাংলা ইনসাইডারের মতো ২৫টি পোর্টাল করেছে। ফেক নিউজ প্রচার করার জন্য। সামনে আরো মিথ্যাচার দেখতে পাবেন। কষ্ট হচ্ছে এজন্য যে, দুদকের মতো স্বাধীন প্রতিষ্ঠানকেও ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। তারা এ কাজটি করছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। একটি দেশ তখন ধ্বংস হয় যখন সে দেশের স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৮
এএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।