ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‌ডাক্তার মামুন কই? জানতে চাইলেন খালেদা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৮
‌ডাক্তার মামুন কই? জানতে চাইলেন খালেদা

ঢাকা: কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের কেবিনে নেওয়ার পরই তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার মামুন রহমানের কথা জিজ্ঞেস করেছেন। বাংলানিউজকে এ কথা জানিয়েছেন খালেদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বিএসএমএমইউর মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল জলিল চৌধুরী। 

খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে শনিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬ তলায় ৬১১ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর হুইল চেয়ারে বসেই খালেদা উপস্থিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকের কাছে ডাক্তার মামুনের কথা জানতে চান।

অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল জলিল চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, আমরা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিতে গেলে তিনি প্রথমেই জানতে চান- ‘ডাক্তার মামুন কই’। পরে অধ্যাপক জলিল বিএনপি প্রধানকে বলেন, ‘ম্যাডাম আজকে আপনি এসেছেন, আপনার শরীরের অবস্থা কী- আমরা খোঁজখবর নিতে এসেছি। আগামীকাল (রোববার, ৭ অক্টোবর) বোর্ডের সব চিকিৎসকের সঙ্গে আপনি চাইলে ডাক্তার মামুনও থাকবেন। ’ পরে খালেদা জিয়া তার স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে ডা. জলিলের সঙ্গে কথা বলেন।

ডা. জলিলের ভাষ্যে, খালেদা জিয়া মেডিকেল বোর্ডকে বলেছেন- আগের সমস্যগুলো এখনো আছে। হাতে, পায়ে ও কোমরে ব্যথা। শরীর কাঁপে, একা একা বসতে-উঠতে পারেন না তিনি।

অধ্যাপক ডা. আব্দুল জলিল চৌধুরী বলেন, আগামীকাল বোর্ডের সব সদস্য একসঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেখবো। তারপর তার চিকিৎসার ব্যাপারে করণীয় বলতে পারবো।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড পেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি রয়েছেন খালেদা। এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ আরও বেশ ক’টি মামলায় তার বিচারকার্য চলছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ দাবি করে বারবার বিএনপির পক্ষ থেকে তার বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দাবি করা হচ্ছে।

খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করার নির্দেশনাসহ তার চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি রিট করা হয়।  

এরমধ্যে আবার গত ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।

পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। যেখানে স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার মত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে যে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে সে হাসপাতালের কথা সুপারিশ করা হয়। সে বিবেচনায় বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

এদিকে ওই রিট আবেদনের পর ৪ অক্টোবর দুপুরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ খালেদাকে বিএসএমএমইউতে দ্রুত চিকিৎসা এবং ভর্তির জন্য ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠনে নির্দেশনা দেন। সেদিন রাতেই এ আদেশের কপি কারাগারে ও বিএসএমএমইউতে পৌঁছায়। এরপর উভয় কর্তৃপক্ষই খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করে।

এরপর শনিবার খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির আগে ডা. জলিলের নেতৃত্বে গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। এই বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ, রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নকুল কুমার দত্ত।

খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির পর কেবিনে তার খোঁজখবর নেওয়ার সময় ডা. আবদুল জলিলের সঙ্গে ছিলেন ডা. বদরুন্নেসা। এ চিকিসৎকরা জানান, খালেদা জিয়াকে বেশ স্বতঃস্ফূর্ত লাগছিল।

যোগাযোগ করলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ৬১১ নম্বর কেবিনে ভর্তি আছেন। তাকে আমরা বলেছি- ‘ম্যাডাম আপনার কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানাবেন’। এর উত্তরে ম্যাডাম বলেছেন, ‘অনেক ধন্যবাদ, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন’।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৮
এজেডএস/এইচএ/

** খা‌লেদার ‘স‌ঠিক চি‌কিৎসা’ নি‌য়ে শঙ্কা ডা. জাহিদ হোসেনের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।