ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এক হয়ে কাজ করতে হবে: গয়েশ্বর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এক হয়ে কাজ করতে হবে: গয়েশ্বর বক্তব্য রাখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সবাইকে দলমত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল (বিডিসি) আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সংকট নিরসনের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

গয়েশ্বর বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটা জাতীয়।

এটি দেশের সমস্যা। কোনো রাজনৈতিক দলের সমস্যা নয়। এটি সমাধানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে চিরস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, এই সমস্যা অনেক দেশেই আছে। ৭১ সালে আমরাও শরণার্থী হিসেবে আরেক দেশে আশ্রয় নিয়েছিলাম। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের পর আমরা নিজেরাই সে দেশ থেকে চলে এসেছি। আমাদের কারও জোর করে পাঠাতে হয়নি। অথচ আজকে যে রোহিঙ্গারা এসেছেন, তাদের প্রত্যাবাসন করতে পারছে না। এটা সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির কারণে হয়েছে।

বিএনপি নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। আইনের শাসন নেই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। দুর্নীতিতে ভরে গেছে। দুর্নীতির কারণেই আজকে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রবণতা বেশি। ক্ষমতায় থাকার প্রবণতা বেশি থাকার কারণ বিনা ভোটে একবার ক্ষমতায় গেলে কোটি কোটি টাকা কামানো সম্ভব। তখন আইজিপি এসেও সালাম দেন। আর আমি যত বড় লোকই হইনা কেন যখন ক্ষমতায় নেই তখন কনস্টেবল এসেও মাথায় বাড়ি দেবেন। সুতরাং এই যে বৈষম্য নাগরিকতার ক্ষেত্রে এই বৈষম্যগুলোই আজকের অস্থিরতার শেষ সীমানায় পৌঁছে গেছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এখনতো গুজবের শেষ নেই। এই আসছেন, এই যাচ্ছেন, বোন হচ্ছেন, না মেয়ে হচ্ছেন, কে হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী- গুজবের কোনো শেষ নেই। যাওয়া-আসার মধ্যে নীরবতা। আসার পরে প্রেস ব্রিফিং করা। এখন একা একা যাওয়া। এই যে কত রকমের কথা-ডালাপালা চারদিকে ছড়াচ্ছে, এই ছড়ানোর মধ্য দিয়েই সবার মধ্যেই তাকাতাকি, কী জানি হচ্ছে এবং সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা নিজেদের মধ্যে তাকাতাকি, এই বুঝি কিছু হচ্ছে এবং নিজেদের মধ্যেই অস্বস্তি-আতঙ্ক বিরাজ করছে। কী জানি আপার কী হইছে, কোনদিন কাকে ক্ষমতা দিয়ে যান না-কি- এসব চলছে। এরকম একটা দুরবস্থার মধ্যেও একটু সাহসের অভাবে আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তিরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের ধাক্কা দিতে পারছি না। এখনও মনে হয় ভালোবাসা কিঞ্চিত, সুযোগ যদি পাই তাহলে আমি দু’টি রাত বাড়িতে সুন্দরভাবে কাটাতে পারি, ভালোভাবে চলতে পারি। এখনও আদালতে গেলে ভাবি জামিন মনে হয় দেবেন না। কেন এত ভয়, কীসের ভয়, মৃত্যু ছাড়া আর মানুষের জীবনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মৃত্যু তো প্রত্যেক জীবনের হবে। এটা অবধারিত। মৃত্যুকে আমি যতই ভয় পাই না কেন, অবহেলা-অবজ্ঞা করতে পারবো না। সে কারণেই আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিটি মানুষের ভয়কে জয় করার মানসিকতা তৈরি করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের দেশের; আলাদা নয়। এটাকে এক মনে করি। অভিন্ন মনে করি। সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা, সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যর্থতা এটি। তাই জাতীয়তাবাদী শক্তির মুখপাত্র হিসেবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বলছি, জাতীয়তাবাদী দল আজকের এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা রোহিঙ্গাদের প্রশ্নে কেউ ডাকুক বা না ডাকুক আমরা একত্র প্রচেষ্টা নিতে পারি। সেখানে যদি সরকারের শিক্ষা হয় ভালো।

সংগঠনের সভাপতি এমএ হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লা চৌধুরী, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এসএমএকে/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।