ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: ফখরুল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ১০ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রায় ৩৫ লাখ মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ চার হাজার ৮শ ১৪টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ’১৯ সাল পর্যন্ত সরকার ও পুলিশের হাতে ১৫২৬ জন মারা গেছে। নির্যাতিত হয়েছে ৪৪৬ একজন, বিএনপিসহ ৮৮১ জন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন। সভা।                                          ছবি: বাংলানিউজমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,  দীর্ঘদিন ধরে বিনা কারণে একটি মিথ্যা মামলায় দেশের জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে। একই মামলায় অনেকের জামিন হলেও তার জামিন সরকার আটকে রেখেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল রিপোর্ট চাওয়া হলেও সেটা এখনো দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বেআইনিভাবে অবৈধ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই কাজগুলো করছে। এই সরকার বাংলাদেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে শুধু উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতায় বসে আছে। কখনো শুধু উন্নয়ন দিয়ে জনগণের সমস্যার সমাধান করা যায় না। গণতন্ত্র ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মৃত, নিখোঁজ ও গুম প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করি। ’৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য। আমরা আগামী বছর মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি পালন করবো। এই সময় এসে মা ছেলের জন্য কাঁদবে, শিশু বাবার জন্য কাঁদবে এটা হতে পারে না।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের ওপর একটি দানব চেপে বসেছে। একে প্রতিহত করতে সব রাজনৈতিক দল , মত-বর্ণ ভুলে গিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। একসঙ্গে সংগ্রাম করি। মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি।

এ গোলটেবিলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ ১৫ টি দেশের কুটনৈতিকরা অংশ নেন।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে এবং শ্যাম ওবায়েদ ও ফারজানা শারমিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, এএইচএম মোফাজ্জল করীম, নুর খান, মাসুদ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার শাহ ফয়সাল কাকর পাকিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থতি রক্ষায় তার দেশের সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে বক্তব্যের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতের কাশ্মির ইস্যুতে বক্তব্য রাখেন। দুই পৃষ্ঠার বক্তব্য রাখার সময়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুই বার তাকে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করার অনুরোধ করেন।

ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার তার বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় সংবিধান থেকে কাশ্মিরে বিশেষ সুবিধা তুলে নেওয়ার পর সেখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং কাশ্মিরের জনগণের স্বাধিকার নিয়ে ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থের লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে অভিহিত করে যে উক্তি করেছেন তা তুলে ধরেন।

গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, রুহুল আলম চৌধুরী, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, ইসমাইল জবিউল্লাহ, এনামুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, জহিরউদ্দিন স্বপন, জেবা খান, তাবিথ আউয়াল, মীর হেলাল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আনিসুর রহমান খোকন, শায়রুল কবির খান, সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ বখতিয়ার আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
পিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।