ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

‘বইমেলায় সারা বছরের ২৫ শতাংশ বই বিক্রি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
‘বইমেলায় সারা বছরের ২৫ শতাংশ বই বিক্রি’ স্টলে বইপ্রেমীদের ভিড়। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: প্রত্যেক প্রকাশকই বইমেলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। কারণ বইমেলায় তাদের সর্বাধিক বই প্রকাশ পেয়ে থাকে।

মেলা উপলক্ষে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। এতে বিক্রি যেমন হয়, তেমনি বইগুলো পাঠকের কাছে পরিচিতি পেতে বড় নিয়ামকের ভূমিকা রাখে। তবে বইমেলায় সারা বছরের ২৫ শতাংশ বিক্রি হয় বলে জানাচ্ছেন প্রকাশকরা।  

দেখতে দেখতে বাঙালির প্রাণের বইমেলা শেষ হওয়ার পথে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে প্রতিদিন প্রকাশ পেয়েছে নতুন বই। পাঠক-লেখক-দর্শনার্থীদের পদাচারণায় মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ।  

মেলায় ভাঙনের সুর বাজায় বাংলানিউজের পক্ষ থেকে একাধিক প্রকাশনীর সঙ্গে কথা বলে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।  

সবার ভাষ্য, বইমেলায় মুনাফা লাভ করা তাদের উদ্দেশ্য না। জ্ঞান অন্বেষণের বড় মাধ্যম বইয়ের সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া বড় উদ্দেশ্য।  

ঐতিহ্য প্রকশনীর প্রকাশক আমজাদ হোসেন কাজল বাংলানিউজকে বলেন, বইমেলাকে কেন্দ্র করে আমরা বইগুলো প্রকাশ করি। এটার একটা উদ্দেশ্য হচ্ছে বইমেলায় সব বই বিক্রি হবে এমন না। এই বইগুলো বাকি ১১ মাস থাকবে, বিক্রি করবে এটা একটা বড় উদ্দেশ্য। আমার মনে হয়, বইমেলায় আমরা ২৫ শতংশ মতো বিক্রি করি। আমাদের উদ্দেশ্যই থাকে পাঠকরা আসবে, বই দেখবে। বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হবে। পরে সারাবছর তাদের পছন্দ অনুযায়ী বই সংগ্রহ করবে।

অনিন্দ্য প্রকাশনীর প্রকাশক আফজাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এবারের বইমেলায় আমাদের আশানুরুপ বই বিক্রি হয়েছে। সারা বছরের বিক্রি হিসাব করলে আমাদের ২৫ শতাংশের বেশি বইমেলায় বিক্রি হয়।

পাঞ্জেরী প্রকাশনীর প্রকাশক কামরুল হাসান শায়ক বাংলানিউজকে বলেন, এবারের বইমেলায় আমাদের ভালো বিক্রি হয়েছে। আমাদের সারা বছরের হিসাব করলে ২৫ শতাংশ বই মেলায় বিক্রি করি।

তবে আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সারাবছরই বই প্রকাশ করলেও অমর একুশে বইমেলায় সর্বাধিক বই প্রকাশিত হয়। আমরা সব বই বিক্রি হবে এই উদ্দেশে বই প্রকাশ করি না। আমার কাছে মনে হয়, ১০ শতাংশ বই বিক্রি হয়।



বইমেলায় বইয়ের প্রচারটা বেশি হয়। বর্তমানে বইমেলার উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেলায় এখন পাইরেটেড বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিদেশি বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এর কারণে সৃজনশীল বই বিক্রি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।  

অপেক্ষাকৃত ছোট প্রকাশনীগুলোতে বিক্রি কম বলে জানিয়েছেন তিনি।

উচ্ছ্বাস প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রকি আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রত্যাশা মতো বই বিক্রি হয়নি। মেলার সময় বাদ দিয়ে বাকি সময় আমরা অনলাইনে বই বিক্রির চেষ্টা করবো।
 

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার ২৭তম দিনে মেলা শুরু হয় বিকেল তিনটায়। বিগত দিনের তুলনায় মেলায় দর্শনার্থী-পাঠকদের পদচারণা ছিল বেশি।

মেলার একদিন বাকি থাকায় সবাই পছন্দের বই সংগ্রহ করছেন।  

বন্ধুদের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বই কিনতে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে একদিন বই দেখেছিলাম কোন প্রকাশনীর বই ভালো। আগামীকাল মেলায় বেশি ভিড় থাকবে তাই আজকে এসে সব বই সংগ্রহ করেছি।

বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এদিন মেলায় নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ১৫৮টি। এর মধ্যে গল্প ২৪, উপন্যাস ৯, প্রবন্ধ ৯, কবিতা ৬৭, গবেষণা ৭, ছড়া ২, জীবনী ৬, ভ্রমণ ২, ইতিহাস ৩, রাজনীতি ১, স্বাস্থ্য ২, বঙ্গবন্ধু ৩, রম্য ১, ধর্মীয় ২, অনুবাদ ৪, অভিধান ১, রচনাবলি ৩, মুক্তিযুদ্ধ ৩, নাটক ৩, বিজ্ঞান ২, সায়েন্স ফিকশন ১ এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ৩।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এসকেবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।