ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

চমকহীন বাজেট

বাজেট রিপোর্টিং টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৪
চমকহীন বাজেট

ঢাকা: ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে কোনো চমক নেই। বরং গতানুগতিক একটি বাজেটই দেওয়া হয়েছে।

শুধুমাত্র সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজেটের আকার বড় হয়েছে।

বরং বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগও (সিপিডি) বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সিপিডির মতে, বিগত বছরের বাজেটের সঙ্গে সমন্বয় রেখে খাতভিত্তিক কিছু ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানো-কমানোর মধ্যেই দায়িত্ব শেষ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটের পরিমাণের হ্রাস-বৃদ্ধি ছাড়া সেই অর্থে বাজেটে কোনো চমক নেই বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেটে।

যদিও স্বাধীনতার পর এ যাবত কালের সর্বোচ্চ বাজেট এটি। এর আকার আড়াই লাখ কোটি টাকা।

বাজেটের আকারকে ‘চমক’ হিসেবে মানতে রাজি নন অর্থনীতিবিদেরাও। তাদের মতে, এই বিশাল আকারের বাজেট দিয়ে সরকারের ঘাটতি আরো বেড়েছে। সেই তুলনায় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা।

বাজেট বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মীর নাছির হোসেন বলেন, ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। কারণ, এশিয়ান ডেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), জাইকাসহ বিদেশি ঋণতাদা সংস্থাগুলোর সুদের হার অনেক কম।

তিনি বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কাজ করতে হবে। না হলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে না। বরং বেকারত্ব সৃষ্টি হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে না।

অর্থনীতিবিদি আনু মুহাম্মদ রেমিট্যান্স থেকে আসা অর্থের সঠিক ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শুধুমাত্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থের যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে এদেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকার সবচেয়ে বেশি চমকে দিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। অথচ এবারের বাজেটে এই খাতে কোনো চমক নেই।    নতুন করারোপ না করে সরকার করের ক্ষেত্র বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, পাশাপাশি কর্পোরেট করের ক্ষেত্রেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। যদিও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করছিল কর কমানোর।

এদিকে, অর্থমন্ত্রীর মতে ‘প্রতিবছরই বাজেটের আগে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে কর কমানোর দাবি ওঠে। তবে তাদের দাবি যৌক্তিক নয়। ’

ব্যক্তি আয়ের করসীমা এবার বাড়ানো হয়নি। তবে করজালের আওতা বাড়ানো হয়েছে। আর এই কর জালের আওতায় বাড়িয়েছে সরকার। এই খাত থেকে সর্বোচ্চ ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, কৃষি, পল্লী উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রেলওয়ে খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।  

জেলা বাজেট প্রণয়ন শুরু করে বর্তমান সরকার। এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ বছর সাতটি জেলায় এই বাজেট দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে টাঙ্গাইলে জেলা বাজেট থাকছে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে। কেন্দ্রীয়ভাবে যে বাজেট প্রণয়ন করা হয়, তাতে জেলাভিত্তিক সম্পদ বণ্টনের হিসাব জনগণের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না। তাই, সরকারের এই উদ্যোগের আওতা বেড়েই চলেছে।

এ ছাড়া সম্পদ বণ্টন ও আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে জেলা বাজেট বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় মনে করছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাও শক্তিশালী হবে এর মাধ্যমে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।