ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

সংশোধিত বাজেটের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়নের সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৬
সংশোধিত বাজেটের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়নের সুপারিশ ছবি: সুমন - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রাক্কলনের উপর ভিত্তি না ধরে সংশোধিত বাজেটকে ভিত্তি ধরে আসন্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

রোববার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশ করা হয়।

সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রতিবছরই প্রাক্কলনের উপর ভিত্তি ধরে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করা হয়। ফলে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাজেটের কাটছাঁট করতে হয়। অর্থাৎ বাজেট সংশোধন করা হয়।

‘এ অবস্থায় উত্তোলনে প্রাক্কলনের উপর ভিত্তি না ধরে সংশোধিত বাজেটকে ভিত্তি ধরে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের সুপারিশ করছি। ’

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির বিস্তার অনুসারে আগামী বাজেটকে আরও উচ্চবিলাষী ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধির বাজেটে রূপান্তর করা যেতে পারে। তার কারণ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর তুলনায় বাজেট বড় হচ্ছে না। বিশ্বের উন্নয়শীল দেশগুলোর বাজেট তৈরি করা হয়, আগের বছরের চেয়ে ২২গুণ পর্যন্ত বেশি। কিন্তু আমাদের দেশের বাজেট তৈরি হচ্ছে ১৪ শতাংশ বেশি।
 
‘তবে বাজেটের আকার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনীতির উন্নতির লক্ষ্যে আর্থিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন বাজেটকে আরও পরিমার্জন করা। বাড়াতে হবে কর আদায়ের পরিধিও। এক্ষেত্রে সরকারি কর আদায়কে আরও বাস্তব ভিত্তিক করা উচিৎ। পাশাপাশি বিজ্ঞান সম্মত বাজেট প্রণয়ন করা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ভঙ্গুরতা বিরাজমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মত সক্ষমতা থাকতে হবে। ’

বাজেটের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকারের তথ্য অনুযায়ী ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে। আর জিডিপির এই অর্জনের ৮০ শতাংশই সরকারি খাতের। প্রবৃদ্ধির এই উচ্চতর মাত্রাকে টেকসই করতে হলে এর গুণগত মান বজায় রাখতে হবে। কারণ আমাদের একদিকে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে অন্যদিকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমেছে। রাজস্ব আহরনের প্রবৃদ্ধিও কমেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৪ বছরের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। যা বিভ্রান্তিকর।     

তিনি বলেন, আগামীতে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হবে। এটিকে আমরা ভালো চোখে দেখছি। তবে এই আইন কার্যকর নিয়ে ব্যবসায়ীদের কিছু দাবি রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের উচিৎ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে তার সুরাহা করা এবং ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে দক্ষ জনবল ও তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়াতে হবে।

করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেট অর্থায়নে কর আহরণ প্রাধান খাত। কিন্তু ৪৩ শতাংশ মানুষ কর দিলেও বাকি ৫৭ শতাংশ করের আওতার বাহিরে।

‘এছাড়াও করপোরেট ট্যাক্স আহরণের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। নির্ধারিত সময়ের তুলনায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর ব্যয় বাড়ছে। অন্যদিকে এর প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না জনগণ।

অনুষ্ঠানে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন সিডিপির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। ‍

এ সময় অন্যদের মধ্যে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন  প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, এপিল ১৭, ২০১৬
এমআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।