ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বাজেট

‘অ্যাবস্যুলুটলি রাইট অ্যাট রং টাইম’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
‘অ্যাবস্যুলুটলি রাইট অ্যাট রং টাইম’ গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা- ছবি- সুমন

ঢাকা: ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য আলোচিত ভ্যাট কাঠামো আগামী নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সরকারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভ্যাট কাঠামোকে সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করলেও অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এ সময়ে জনগণের ওপর এ ভ্যাট প্রণয়নের বিষয়টিকে বলছেন, ‘অ্যাবস্যুলুটলি রাইট অ্যাট রং টাইম’।

রোববার (১১ জুন) বিকেলে ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের কনফারেন্স হলে ‘নতুন মূল্য সংযোজন কর: ব্যবসা এবং ভোক্তা পর্যায়ে প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন আইনে ভ্যাটের বিষয়টি জটিল।

তবে আলোচনার মাধ্যমে ধোঁয়াশা কাটছে। বর্তমানে দেশের ১৬৯টি উচ্চ আয় ও নিম্ন আয়ের দেশে ভ্যাট চালু আছে। ভুটান, ভারত ও নেপালে যদি ভ্যাট নেওয়া যায়, বাংলাদেশেও নেওয়া যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন দেখিয়েছেন, বৈশ্বিকভাবে ভ্যাটের হার ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশে ১৫ শতাংশ। তাহলে এটি গ্রহণযোগ্য হারেই রয়েছে।  

তিনি বলেন, ‘বাজেটে আইএমএফের চাপ নেই। তারা আমাদের পরামর্শ দেন’।  

এম এ মান্নান বলেন, অনেকগুলো স্তরে ভ্যাট না নিয়ে একটি সাধারণ স্তরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যেটা ১৫ শতাংশ। যেহেতু প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, তাই এ ভ্যাট দেওয়া বড় বাধা হবে না বলেও মনে করেন তিনি।  

রাজস্ব আদায়ের বিষয়টি কঠিন হবে ধারণা করে সংগ্রহের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বোধ হয় পারবো। আর সব আইনেরই পরিবর্তন করা যায়। প্রয়োজনে আবারো সংশোধন করা হবে’।

ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আবগারি শুল্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে এ শুল্ক নেওয়া হয়। অনেকেই জানতেনও না। বিষয়টি হচ্ছে, তখন ৫ হাজার বা ৫ কোটি টাকার উভয় অ্যাকাউন্ট থেকে একই হারে শুল্ক নেওয়া হতো।  

তিনি বলেন, দেশে এক লাখ টাকার নিচে আশি শতাংশ অ্যাকাউন্ট। এসব অ্যাকাউন্টের আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। তবে এক লাখ টাকার ওপরে হলেই শুল্ক দিতে হবে। যা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হয়েছে।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাটের বিষয়টি ঠিক হয়েছে। তবে আমরা রং সময়ে (ভুল সময়ে) ঘা দিয়েছি। অ্যাবস্যুলুটলি রাইট অ্যাট রং টাইম (ভুল সময়ে সঠিক কাজ)’।  

ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সানের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর জাকির হোসাইন। নতুন মূসক আইন ও অনলাইনে ভ্যাট প্রদানের বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।  

তিনি বলেন, এ আইনের মাধ্যমে ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে। ব্যবসার খরচ কমবে এবং করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে।  

সভায় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, এ ভ্যাট ব্যবস্থায় ভোক্তাদের ওপর চাপ বাড়বে। পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রেতারা এ টাকা যোগাড় করবেন।  

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ভ্যাটের সঙ্গে ভোটের সর্ম্পক রয়েছে। ১৯৯১ সালে ভ্যাট আরোপ করে ১৯৯৬ তে বিএনপি সরকারের বিদায় হয়েছিল। বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়লে তার প্রভাব ভোটেও পড়তে পারে।  

সভায় আরো বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিসার্চ ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ডিসিসিআই’র ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
এমএন/জেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।