ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বাজেট

বাজেটে প্রায় ৫০ শতাংশ রাজস্ব আয় বাড়ানো অবিস্মরণীয় ঘটনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
বাজেটে প্রায় ৫০ শতাংশ রাজস্ব আয় বাড়ানো অবিস্মরণীয় ঘটনা

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্ব আয় বাড়ানো একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। 

তিনি বলেন, বাজেটে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ, উৎপাদন, ঋণপ্রবাহের ধারা, আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স সবগুলো বিবেচনায় নিলে বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা পুনঃবিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত বাজেটটি গতানুগতিক বাজেট, এর বাইরে এসে নতুন কোনো সৃজনশীলতা দেখানোর দরকার ছিল সেটা দেখা যায়নি।

‘বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা বা সক্ষমতার বিষয়ে সিপিডি বারবার বলেছে। কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে বাজেট বাস্তবায়ন বাড়ানোর সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সামস্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো বাস্তোবচিত হয়নি। একই সঙ্গে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে। ’

শুক্রবার (১২ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী ‘জাতীয় বাজেট ২০২০-২১: সিপিডি’র পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনলাইন মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সামগ্রিক অর্থনীতির যে পর্যবেক্ষণ সেখানে দেখা গেছে ২০২০-২১ অর্থবছরের যে সামস্টিক অর্থনীতির যে কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষেত্রে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। এ বিষয়ে কিছু প্রশ্নও দেখা দিয়েছে। কারণ বাজেটের রিকভারির যে পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে সরকার মনে করছে কোভিড আক্রান্তের সময়কাল থেকে আমাদের রিকভারিটা আগামী একবছরের মধ্যে করতে পারবে। কিন্তু পৃথিবীর বহু দেশে এটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এই অনুমতিটা কতোটা বাস্তবোচিত হয়েছে সেটাও প্রশ্ন বিদ্ধ রয়েছে।  

রাজস্ব আহরণের বিষয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আগের অর্থবছরের বাজেটের মতোই রাজস্ব আহরনের বিরাট একটি লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের কথা বলা হয়েছে। আর ২০১৯-২০ সংশোধিত বাজেটে ৩ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার ধরা হয়েছিল। কিন্তু সিপিডি এর আগে যেটি হিসাব করে দেখেছিল ২ লাখ ৫২ হাজার ৮শ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হবে।

‘যদি আমরা সিপিডির এই হিসাব ধরে ২০২০-২১ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রাটি দেখি তাহলে এখানে রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এটা গতবারের চেয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য। একটি অর্থবছরে প্রায় ৫০ শতাংশ রাজস্ব আহরণ বাড়ানো অবিস্মরণীয় ঘটনা।  আমাদের গত কয়েক বছর ধরেই দেখে আসছি রাজস্ব আহ্বানে ক্ষেত্রে রাজস্ববোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ’

তিনি বলেন, ৫০ শতাংশ রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হলে এনবিআরের যে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। রাজস্ব বহির্ভূতখাতগুলো থেকেও আরো রাজস্ব বাড়াতে হবে। আমরা দেখেছি এসময়ে রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রাটি দেওয়া হয়। তা বাস্তবায়নের অন্যতম কারণটি হলো রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে যে ধরনের সংস্থা দরকার তা এখনও করা হচ্ছে না। একই সঙ্গে রাজস্ব বিভাগের যে ধরনের জনশক্তি, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, নীতিমালাসহ অন্য পদক্ষেপ দরকার সেগুলো এখন পর্যন্ত নেওয়া হয় না।

‘ভ্যাট আইন বাস্তবায়ের দীর্ঘসুত্রতা লক্ষ্য করা গেছে। সুতরাং রাজস্ব আহরণে ঘাটতি পূরণের জন্য একদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়াতে হবে অন্যদিকে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। চলমান সংস্কার কার্যক্রমের দক্ষতা বাড়াতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
জিসিজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।