বাংলানিউজ: অগমেডিক্স কি ধরনের কাজ করে?
রাশেদ মুজিব নোমান: গুগল গ্লাসকে ব্যবহার করে স্বাস্থ্যখাতে কীভাবে পরিবর্তন আনা যায় তা থেকেই অগমেডিক্সের যাত্রা শুরু। আমাদের প্রতিষ্ঠান দুই ধরনের কাজ করে- আমরা নিজেদের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করি, যেটি স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যবহৃত হয়।
বাংলানিউজ: অগমেডিক্সে বাংলাদেশিদের কাজের কেমন সুযোগ রয়েছে?
রাশেদ মুজিব নোমান: আমাদের প্রতিষ্ঠানের সব খাতেই বাংলাদেশিদের কাজের সুযোগ রয়েছে। অগমেডিক্সে যে সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে তাও বাংলাদেশি প্রকৌশলীদেরই তৈরি বলা যায়। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের প্রায় নব্বইভাগ কাজই করেছেন আমাদের দেশীয় প্রকৌশলীরা। বিপিও খাতে ডকুমেন্টেশন স্পেশালিস্ট বা স্ক্রাইব পদে আমাদের সবচেয়ে বেশি লোকবল প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় আমরা পর্যাপ্ত স্ক্রাইব পাচ্ছি না। যার ফলে কাজগুলো বাংলাদেশীদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্ক্রাইব আছেন পঞ্চাশ জনেরও কম, যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দুইশ' স্ক্রাইব কাজ করছেন। এই কাজের সুযোগগুলো সহজেই বাংলাদেশিদের হতে পারে।
বাংলানিউজ: কাজগুলো বাংলাদেশিদের হাতছাড়া হচ্ছে কেনো?
রাশেদ মুজিব নোমান: স্ক্রাইবদের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটের চিকিৎসকদের সঙ্গে কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে যিনি ডকুমেন্টেশন স্পেশালিস্ট বা স্ক্রাইব হবেন তার অবশ্যই ইংরেজিতে ভালো দখল থাকতে হবে। লিসেনিং এবং রাইটিংয়ে ভালো হতে হবে। অর্থাৎ বলার চেয়ে ইংরেজি শুনে বুঝতে পারা এবং লেখার দক্ষতা আমাদের বেশি প্রয়োজন। এজন্য ইংরেজিতে দক্ষ যেকোন বিষয়ের গ্রাজুয়েটদের আমরা খুঁজছি। পাশাপাশি তাদের কম্পিউটারে ইংরেজি টাইপিংয়ে পারদর্শী হতে হবে। কিন্তু এধরনের চাহিদা অনুযায়ী জনবলের বেশ অভাব।
বাংলানিউজ: শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠ্যক্রমে ইংরেজি অর্ন্তভুক্ত আছে। তবুও ইংরেজিতে দুর্বলতার কারণ এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?
রাশেদ মুজিব নোমান: এমনটা নয় যে, আমাদের সাথে কাজ করতে হলে খুব কঠিন ইংরেজি জানতে হবে। সহজ ইংরেজিই ব্যবহার হয়। তবে আমরা সম্ভবত শুধু পাস করার জন্যই পড়ছি, জানার বা শেখার জন্য নয়। অগমেডিক্সে কাজের ক্ষেত্রে লিসেনিং স্কিল ভালো হতে হবে। এজন্য ইংরেজি মুভি দেখা যেতে পারে। তাহলে শুনে বুঝতে পারার দক্ষতা বাড়বে। পাশাপাশি রাইটিংয়ের ক্ষেত্রে গ্রামার ভালোভাবে জানতে হবে। কেননা গ্রামারের একটি ভুল পুরো অর্থ পাল্টে দিতে পারে। কয়েকটি বিষয়ে জোর দিলেই ইংরেজিতে ভালো করা সম্ভব।
বাংলানিউজ: বিপিও খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
রাশেদ মুজিব নোমান: বিপিও খাতে বাংলাদেশের সামনে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে বিপিও খাতে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট তৈরি হচ্ছে। এর প্রায় ৫৬ ভাগই ভারতের দখলে। তারা তাদের স্কিল এবং ইংরেজিতে দক্ষতার মাধ্যমে এ খাত নিজেদের আয়ত্ত্বে নিয়ে আসছে। আমরা নিজেদের মাতৃভাষাকে অবশ্যই সবার উর্ধ্বে স্থান দিব। তবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এবং বিপিও ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের স্থান পাকাপোক্ত করতে ইংরেজির উপর অবশ্যই জোর দিতে হবে। সরকার বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেশে কাজের পরিবেশ তৈরি করে দেয়ার জন্য যা করণীয় সবই করছে। এতে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। তবেই এ খাতে বিশাল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
বাংলানিউজ: দেশের বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠানের পদক্ষেপ জানতে চাই
রাশেদ মুজিব নোমান: অগমেডিক্স বাংলাদেশে সাত হাজার কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। প্রথম ধাপে আমরা পাঁচশ জন স্ক্রাইব নিয়োগ দিতে চাই। পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং, অপারেশনস, রিক্রুটমেন্ট এবং আইটি অ্যান্ড সাপোর্ট টিমেও নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। যেকেউ চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যারিয়ার পেইজে গিয়ে আবেদন করতে পারেন। অগমেডিক্স বাংলাদেশ টিমের শীর্ষস্থানে অনেক বাংলাদেশি আছেন যারা অন্তত এক দশক দেশের বাইরে চাকরির পর দেশে ফিরে এসেছেন। আমরা দেশের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরিতে এবং তাদের দক্ষতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছি।
আগামী পর্বে থাকছে অগমেডিক্সে পাঁচশ স্ক্রাইব নিয়োগের বিস্তারিত তথ্য। জানতে পাবেন কাজের ধরন, যোগ্যতা, নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধাপ, বেতন ভাতা ও সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে। ব্যাটে বলে মিলে গেলে পাঁচশ স্ক্রাইবের একজন হতে পারেন আপনিও! বাংলানিউজ ক্যারিয়ার বিভাগের সাথেই থাকুন...