ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

মিরসরাইয়ে দাহ্য পদার্থ নিয়ে পাহাড়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৫
মিরসরাইয়ে দাহ্য পদার্থ নিয়ে পাহাড়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

চট্টগ্রাম (মিরসরাই): মিরসরাইয়ের পাহাড়ি এলাকায় সব ধরনের দাহ্য পদার্থ (দিয়াশলাই, বিড়ির আগুন, গ্যাস লাইটার, তৈল জাতীয় পদার্থ) নিয়ে প্রবেশে ও পাহাড়ে আগুন দেওয়ার (জুম চাষ, পাহাড় পরিষ্কার বা অন্য কোনো প্রয়োজনে) ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ।

শুষ্ক মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে প্রাকৃতিক ও সরকারি সামাজিক বনভূমি রক্ষা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের লক্ষ্যে চলতি বছর আগাম সুরক্ষা হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে চট্টগ্রাম (উত্তর) বন বিভাগের মিরসরাই রেঞ্জ অফিস সূত্র রোববার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।



বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরসরাইয়ে গোভনীয়া বন বিট কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর মিরসরাইয়ের বিস্তীর্ণ পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডে শত শত একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাহাড়ে কোনো কারণে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে লোকবল সংকট ও আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত সুবিধা না থাকায় অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে বনভূমি রক্ষা করা সম্ভব হয়না।
 
গত কয়েক বছরও শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডের ফলে সামাজিক ও প্রাকৃতিক বনায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও বর্তমানে পরিবেশ বিপর্যয় এবং জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে। তাই চলতি বছর পাহাড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের দাহ্য পদার্থ নিয়ে পাহাড়ে প্রবেশ ও জুম চাষ, পাহাড় পরিষ্কার বা অন্য কোনো প্রয়োজনে পাহাড়ে আগুন জ্বালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে জন-সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিষয়টি জানিয়ে ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কেউ এ নিষধাজ্ঞা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান বিট কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে অর্থদণ্ড ছাড়াও সর্বনিন্ম ছয় মাস ও সর্বোচ্চ এক বছরের জামিন অযোগ্য কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মুক্তারুজ্জমান বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৪ সালেও শুষ্ক মৌসুমে মিরসরাইয়ের গোভনীয়া, বারইয়াঢালা, করেরহাট বনবিট এলাকায় একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় সাতশ’ হেক্টর প্রাকৃতিক ও সামাজিক বনায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার অনুমানিক ক্ষয়-ক্ষতি অর্ধশত কোটি টাকার উপরে।

পাহাড়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করানোও সম্ভব নয়, তাই আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও বনরক্ষীদের হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এভাবে কয়েক বছর টানা আগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়-ক্ষতির মুখোমুখি হয়ে বর্তমানে সামাজিক বনায়নে উপকার ভোগীদের চরম অনীহা দেখা দিয়েছে। বনভূমি পুড়ে ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হয়েছে শতশত একর পাহাড়। তাই স্থানীয়ভাবে জন-সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চলতি বছর আগাম এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।