শ্রীমঙ্গল: সারা শরীর তার সবুজ। ছোট-বড় বন-জঙ্গল, গাছ-গাছালি ঘেরা বাগান কিংবা ঘন ঘাসের বুকে দিব্বি সে ঘুরে বেড়ায়।
এ পতঙ্গটির নাম ইংরেজি নাম Praying Mantis এবং বৈজ্ঞানিক নাম Mantodea। এরা অন্যান্য পতঙ্গের তুলনায় বেশ সাহসী। এদের বিশেষ দিক হলো গাছপালার সবুজের মাঝে মিশে থাকা। যার ফলে এ পতঙ্গকে সহজে খুঁজে বের করা যায় না। দেখতে পাতার মতো লাগে বলে নিশ্চিন্তে অন্য পোকারা এর হাতের নাগালের মধ্যে চলে আসে। ব্যাস! অবলীলায় খাবারে পরিণত হয় তারা।
মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে জানা যায়, এর রয়েছে বড় বড় দুটো চোখ। তবে কান রয়েছে মাত্র একটি। যা তার পেটের সামনের অংশে অবস্থিত। এ পতঙ্গগুলো নিজের ঘাড়ের ওপর মাথাকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরাতে পারে। ফলে তার পক্ষে অপেক্ষমাণ শিকারকে খুঁজে বের করা অনেকটাই সহজ হয়।
এর রয়েছে অত্যন্ত শক্তিশালী কাঁটাযুক্ত দুটো হাত। পেছনে রয়েছে চারটি পা। শিকার ধরার সময় ওরা কাঁটাযুক্ত হাতের ব্যবহার করে। বাকি সময় সেগুলো গুটিয়েই রাখে। মথ, ফড়িং, ঝিঁঝিঁপোকা এবং বিভিন্ন মাছি এদের কবলে পড়ে প্রাণ হারায়। বড় আকৃতির এ পতঙ্গগুলো কাঁকড়াবিছে, ব্যাঙ, মাছ, ছোট পাখি এমনকি ছোট সাপও ধরে খায়।
এদের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর দিক হলো– সঙ্গমের মুহূর্তে মেয়ে পতঙ্গটি অনেক সময় ছেলে পতঙ্গটিকে খাবারের লোভে মেরে ফেলে। পুরুষ পতঙ্গগুলো ক্ষুধার্ত মেয়ের চেয়ে ভরাপেটে থাকা নারী পতঙ্গগুলোর সঙ্গে মিলনে বেশি আগ্রহী হয় বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
এমন পতঙ্গকে এক নজর দেখতে ইচ্ছে হলে বন-জঙ্গলের পথে হাঁটতে গিয়ে ঘাস বা লতা-পাতা অথবা সবুজের দিকে চোখ রাখুন, হয়তো পেয়েও যেতে পারেন। হঠাৎ দেখলে মনে হবে - সে তার দু’হাত বুকে কাছে গুটিয়ে হয়তো আপনার প্রতি সম্মান নিবেদন করছে।
পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য পাতা সম্পর্কে মতামত, পরামর্শ ও লেখা পাঠাতে যোগাযোগ করুন এই মেইলে: poribesh.bn24@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৫
এএ