ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

খাদ্য সংকটে কেশবপুর ছাড়ছে কালোমুখো হনুমান

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
খাদ্য সংকটে কেশবপুর ছাড়ছে কালোমুখো হনুমান ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যশোর: খাদ্য সংকটে যশোরের কেশবপুর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান। দেশে বিলুপ্ত প্রায় এ হনুমানের পরিচর্যা ও সংরক্ষণে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।



উপজেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ চত্বর, হাসপাতাল কোয়ার্টার এলাকা, পাইলট স্কুলসহ পৌর এলাকায় দলে দলে বিভক্ত হয়ে থাকা হনুমানের দলে অন্তত ৪০টি বাচ্চা রয়েছে।

রোববার বিকেলে বাদাম, কলা আর পাউরুটি নিয়ে হাসপাতাল কোয়ার্টার এলাকায় গিয়ে ডাক দিতেই ছুঁটে এলো একদল হনুমান। এই দলটিতে অন্তত ২০টি বড় হনুমান রয়েছে। তবে, চলতি মাসেই এ দলে ছয়টি নতুন অতিথি এসেছে।

বন বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, কেশবপুর পৌর এলাকার উপজেলা পরিষদ চত্বর, রামচন্দ্রপুর, ব্রক্ষকাঠি, পাইলট স্কুল এলাকা, মধ্যকুল, হাসপাতাল এলাকা, ভোগতি, নরেন্দ্রপুর, বালিয়াডাঙ্গা, মণিরামপুরের মুজগুনি, বাঙালিপুর, দূর্গাপুর, ফকিররাস্তা এলাকায় তিন শতাধিক কালোমুখো হনুমানের বসবাস।

এসব হনুমানের খাদ্যের জন্য বন মন্ত্রণালয়ের আওয়তায় ‘জীব ও বৈচিত্র্য সংরক্ষণ’ নামে একটি প্রকল্পের আওতায় প্রতিদিন এক হাজার ৭৫৮ টাকা মূল্যের এক মণ কলা, খোসাসহ আড়াই কেজি বাদাম ও দুই কেজি পাউরুটি সরবরাহ করা হয়।

মেসার্স আলমগীর হোসেন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ খাদ্য সরবরাহ করছে। তবে, এতসংখ্যক হনুমানের বিপরীতে খাদ্য একেবারেই কম হওয়ায় শুধুমাত্র উপজেলা পরিষদ চত্বর, হাসপাতাল গেট, রামচন্দ্রপুর, পাইলট স্কুল এলাকা, ব্রক্ষকাঠি ও মধ্যকুল এলাকায় অবস্থানরত প্রায় ১০০টি হনুমানের মধ্যে এ খাদ্য বিতরণ করা হয়।

তবে, আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত আরও দুই শতাধিক হনুমানের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

এছাড়াও বরাদ্দকৃত খাদ্যের অর্ধেকেরও কম বন্টন করা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের মতে, বর্তমানে বন বিভাগের টেন্ডারে খাদ্য সরবরাহের কাজ যশোর বিকে রোড এলাকার মেসার্স আলমগীর হোসেন নামে প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পেলেও তিনি যশোর ঝুমঝুমপুর এলাকার মিজান নামে এক ব্যক্তিকে এ খাবার সরবরাহের দায়িত্ব দিয়েছেন।

ফলে, মিজান নামে ওই ব্যক্তি উপজেলা বন কর্মকর্তার যোগসাজসে বরাদ্দের তুলনায় অর্ধেকেরও কম খাদ্য বিতরণ করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

তবে, এ বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা ফরেস্টার মো. হাবিবুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মূলত প্রতিদিন দুই হাজার আট টাকা বরাদ্দ থাকলেও বিতরণকারীকে প্রতিদিন মজুরি বাবদ ৩৫০টাকা দিতে হয়। বাকি এক হাজার ৭৫৮ টাকা মূল্যের এক মণ কলা, খোসাসহ আড়াই কেজি বাদাম ও দুই কেজি পাউরুটি সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয়।

এক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, খাদ্য বিতরণের চলমান প্রকল্পটি আগামী জুন মাসে শেষ হবে। ফলে নতুন প্রকল্প গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
পিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।