ঢাকা আর্ট সামিট থেকে: জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও মোকাবেলায় বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠানই কাজ করছে। প্রতিনিয়ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে সভা, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম।
রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীর শিল্পকলা একডেমির চিত্রশালায় ঢাকা আর্ট সামিটের আত্ম-অন্বেষণ গ্যালারিতে গিয়ে খুঁজে পাওয়া গেল এমনই নয় তরুণ-তরুণীকে। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছেন।
সুদূর ভুটান থেকে আসা এই তরুণ-তরুণীরা আর্ট সামিটে অংশ নিয়ে নিজেদের গ্যালারিতে তৈরি করছেন বিশালাকৃতির প্রতীকী মাছ। শিল্পকর্মের কাঁচামাল হিসেবে তারা ব্যবহার করেছেন ফেলে দেওয়া বোতল, নষ্ট প্লাস্টিকের কফি কাপ ও বাঁশ। আর এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশে ভুটান দূতাবাস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
প্রতীকী মাছের মাধ্যমে তারা বোঝাতে চাইছেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে এই পৃথিবীর সব মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি তাদের জন্য বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
কাছে গিয়ে দেখা গেল, কেউ বোতল কাটছেন, কেউ সেই কাটা বোতল দিয়ে তৈরি করছেন মাছ। মাছ তৈরি হয়ে গেলে তা ঝুলিয়ে দিচ্ছেন বাঁশের তৈরি বড় আকৃতির মাছটার গায়ে। কেউ কফির কাপ দিয়ে তৈরি করছেন মানুষের চোখ। প্রতীকী মাছকে নষ্ট বোতলে ঢেকে দিতে গ্যালারির এক পাশেই স্তুপ করে রাখা হয়েছে সংগৃহীত বোতল। প্রতীকী মাছের দু’পাশে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাছের উপর যে বিরূপ প্রভাবগুলো পড়ছে তার কিছু চিত্র।
জলবায়ু পরির্তনের ফলে এই সু্ন্দর পৃথিবীর অনেক কিছুর ওপরই বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তবে তারা শুধু ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন পানির ওপরের প্রভাবটা।
প্রতীকী মাছটি এখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। তবে এরই মধ্যে তা দেখতে জড়ো হচ্ছেন অনেকে।
ভূটান থেকে আগত ওই তরুণদলটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তারা প্রত্যেকে ‘ভ্যাস্ট’ (ভোলানটারি আর্টিস্ট স্টুডিও থিম্পু) নামের একটি সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এসেছেন। যে সংগঠনটি সে দেশে আর্ট নিয়ে কাজ করে। বছরে দু’বার তাদের ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। তারপর তারা ছড়িয়ে পড়েন গ্রামে গ্রামে। মৌলিক আর্ট ও বিভিন্ন রঙ সম্পর্কে শিশুদের জ্ঞান দেন তারা।
এই নয়জনের একজন জুকি দ্বীপা। পড়ালেখা করেছেন পাকিস্তানের বিকেন হাউজ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ডিজাইন নিয়ে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, জলবায়ুর প্রভাবে দিনদিন পানি নোংরা হয়ে যাচ্ছে। পানিতে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু পচনশীল, আবার কিছু অপচনশীল। এসব কারণে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে পানি। আমাদের কাজে এই বিষয়টিগুলো আমরা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।
ভূটানের তরুণদলের অপর একজন দ্বিপ্তী রাণী বাংলানিউজকে জানালেন, তাদের নয়জনের মধ্যে পাঁচজন ছাত্র ও বাকিরা কর্মজীবী। তবে তারা সবাই ছবি আঁকেন এবং সেই ছবি বিক্রি করে গরীবদের মাঝে চাল বিতরণ করেন। এ কর্মসূচির তারা নাম দিয়েছেন ‘রাইস ব্যাংক’।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
এমআইকে/আরএইচ