ঢাকা: নাম তার মদনটাক। দেহের উপরের অংশ ধূসর কালো ও নিচের অংশ সাদা।
বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই) ঈদের দিন রাজধানীর জাতীয় চিড়িয়াখানায় উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ প্রবেশ করতে থাকেন সকাল ১০টা থেকেই। এদিন আগতরা চিড়িয়াখানায় এসেই যেন মদনটাক দেখতে ভিড় করেন প্রথমে। তাই এ পাখির খাঁচার কাছে ভিড় ছিল যথেষ্ট। যার মধ্যে বাচ্চাদের আগ্রহ খানিকটা বেশি।
ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সিফাত তার বাবা আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চায় পাখিটি সম্পর্কে। বাবা খাঁচার সামনে থাকা বোর্ড থেকে পড়ে শোনান পাখিটির নানা বৈশিষ্ট্য।
আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মদনটাক পাখি সাধারণত দেখা যায় না। তাই মানুষের আকর্ষণ বেশি এই পাখিটিকে ঘিরে। তবে এমন আরও অনেক পাখি ও প্রাণী আছে এই চিড়িয়াখানায়, যাতে বাচ্চাদের আকর্ষণ। সব বাচ্চাদের নিয়ে এখানে আসা উচিত। তারা এসব প্রাণী সম্পর্কে জানতে পারবে, শিখতে পারবে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল, ভিয়েতনাম ও জাভায় পাওয়া যায় মদনটাক পাখি। এরা বক পরিবারের সদস্য। এদের গলায় কোনো পালক থাকে না। দেহের ওজন ৪ কেজি থেকে ৬ কেজি পর্যন্ত হয়। নদী, বিল ও হাওড় অববাহিকায় এসব পাখি আবাস।
মদনটাক পাখিরা মাছ, ব্যাঙ, সরীসৃপ কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। তিন বছর বয়সে এরা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। আবদ্ধ অবস্থায় এরা ৩০ বছর থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ঈদ, পহেলা বৈশাখসহ নানা উৎসবের দিন মানুষের ঢল নামে জাতীয় চিড়িয়াখানায়। এই চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ১৪০ প্রজাতির ২ হাজার ৬৪৪টি প্রাণী, পাখি ও মাছ আছে।
জাকির হোসেন জানান, নতুন নানা পাখি ছাড়াও বরাবরের মতো মানুষের আকর্ষণ থাকে বাঘ, ভারতীয় সিংহ, ডোরাকাটা হায়েনা, চিত্রা হায়েনাসহ নানা প্রাণীর প্রতি।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে হাইকোর্ট চত্বরে জীবজন্তুর প্রদর্শনশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় চিড়িয়াখানাটি। পরবর্তীকালে ১৯৭৪ সালে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয় এটি। চিড়িয়াখানাটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। বছরে প্রায় ৩০ লাখ দর্শনার্থী ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে থাকেন। ২০১৫ সলের ৫ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন করে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা নামকরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৬
ইউএম/আইএ