পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) বলছে, আগামী পাঁচদিনের মধ্যে যশোর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, চাঁদপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লারও কিছু কিছু অংশ প্লাবিত হবে।
এফএফডব্লিউসি’র পর্যবেক্ষণাধীন ৯০ স্টেশনের মধ্যে সে সময় ৩৭ টি পয়েন্টে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপরে থাকবে।
আত্রাইয়ের পানি আত্রাইয়ে বিপদসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার, সিংড়ায় ৭১ সেন্টিমিটার, করতোয়া-আত্রাই-ঘাঘটের পানি বাঘাবাড়িতে ১১২ সেন্টিমিটার, আর নওগাঁয় ছোট যমুনার পানি ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
ঘাঘটের পানি গাইবান্ধায় বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি কুড়িগ্রামে ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারীতে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার, যমুনার পানি বাহাদুরাবাদে ১৪৩ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ১১৯ সেন্টিমিটার, কাজীপুরে ১৯২ সেন্টিমিটার সিরাজগঞ্জে ১৭৫ সেন্টিমিটার, পোড়াবাড়িতে ৫৯ সেন্টিমিটার এবং আরিচায় ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
পুরাতন ধলেশ্বরীর পানি জগিরে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরীর পানি কালাগাছিয়ায় ১১৭ সেন্টিমিটার, কালিগঙ্গার পানি তারাঘাটে ৬৯ সেন্টিমিটার ও টঙ্গি খালের পানি টঙ্গিতে বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
বুড়িগঙ্গার পানি ঢাকার হরিহরপুরে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার, বালু নদীর পানি ডেমরায় ১২ সেন্টিমিটার, শীতলক্ষ্ম্যার পানি নারায়ণগঞ্জে ২৭ সেন্টিমিটার, লাখপুরে ১০৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
ধলেশ্বরির পানি এলাশিনঘাটে বিপদসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার, মুন্সীগঞ্জে ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
তালবাড়িয়ায় গঙ্গার পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার এবং পদ্মার পানি গোয়ালন্দে ১৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
এছাড়া পদ্মার পানি ভাগ্যকূলে বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ও মাওয়ায় ১৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
গড়াইয়ের পানি কামারখালিতে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার, সুরেশ্বরে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
সুরমার পানি সিলেটে বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
কুশিয়ারার পানি শেওলায় বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার, শেরপুর-সিলেটে ৬ সেন্টিমিটার, দিরাইয়ে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
এদিকে মেঘনার পানি নরসিংদীতে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার, বাইদের বাজারে ৮৭ সেন্টিমিটার, মেঘনা ব্রিজে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।
দেশের অভ্যন্তরে বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদী ভরাট থাকায় পাহাড়ি ঢলের পানি ব্যাপক বন্যা সৃষ্টি করবে। ফলে নতুন করে প্লাবিত হবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোও। এক্ষেত্রে পানি সাগরে নেমে যেতে বিলম্ব হলে বন্যা গত জুলাইয়ের চেয়ে কিছুটা দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে ২০টির মতো জেলায় প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়ে দেশের ৩৩ জেলা আক্রান্ত হওয়ার কথা ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে দেশের ওপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় গত কয়েকদিন ধরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, সারাদেশের সব বিভাগেই মাঝারি থেকে ভারী অথবা অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেট ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে ভারী বর্ষণের কারণে ভূমিধসের আশঙ্কাও প্রবল।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম