ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

সুপরিচিত পিশাইচ ফুলের বীজে পালক থাকে

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
সুপরিচিত পিশাইচ ফুলের বীজে পালক থাকে আগাছাময় পিশাইচ গাছের গুচ্ছাকার ফুল। ছবি: বিশ্বপ্রিয় কাব্য  

মৌলভীবাজার: চলতি পথে হঠাৎ করেই দেখা হয়ে যায় সুপরিচিত পিশাইচ ফুল। ফুলগুলো গুচ্ছাকারে থাকে। তবে এসব ফুলের গাছগুলো আমাদের দেশের উদ্ভিদ নয়, বিদেশি উদ্ভিদ। উদ্ভিদ গবেষকদের কাছে এরা ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত।

বিদেশের মাটিতে এসব উদ্ভিদের জন্ম হলেও বর্তমানে এরা বাংলাদেশের মাটিতে এখন জন্মলাভ করছে এবং ভালোভাবেই বংশবৃদ্ধি করেছে আমাদের পরিত্যক্ত চারপাশে। অনেকগুলো ফুল হয়ে একটা গুচ্ছ তৈরি হয়।

এরা বনভূমির ‘পিশাইচ ফুল’ নামে পরিচিত।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এবং উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, এ ফুলগুলোর নাম ‘পিশাইচ ফুল’ বা  ‘মটমটিয়া’ বলে। এদের ইংরেজি নাম Siam Weed এবং বৈজ্ঞানিক নাম Chromolaena odorata। এরা Aster পরিবারের উদ্ভিদ। ফুলগুলো সাদা থেকে হালকা বেগুনি রঙ ধারণ করে।
 
তিনি আরও বলেন, ‘এই ফুলের পুষ্পবিন্যাস হলো শিরোমঞ্জুরি। অনেকগুলো ছোট ছোট ফুল এক হয়ে শিরমঞ্জুরি তৈরি করে। শিরোমঞ্জুরিতে দুই প্রকাশের ফুল থাকে। একধরণের ফুল যেটা সুতার মতো; তার নাম ‘রে-ফ্লোরেড’। অপর ফুলটির নাম ‘ডিস্ক-ফ্লোরেড’। দুই প্রকারের ফুল একত্রে গুচ্ছ তৈরি করে থাকে। ’আগাছাময় পিশাইচ গাছের গুচ্ছাকার ফুল।  ছবি : বিশ্বপ্রিয় কাব্য
এই উদ্ভিদের বীজের গায়ে পালক থাকে। বীজগুলো পরিপূর্ণ হলে বাতাসের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি কাছে-দূরে ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে বলে জানান ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
 
অবৈধ অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরা ‘ইনভেসিব’ অর্থাৎ বিভিন্ন দেশে অনাকাঙ্খিত আগন্তুক উদ্ভিদ এরা। এ উদ্ভিদের উৎপত্তিস্থান সাউথ আমেরিকা। বিশেষ করে ম্যাক্সিকো, ট্যাকসাস, ফ্লরিডা, ক্যারাবিয়ান আইল্যান্ড প্রভৃতি এই সব এলাকায় বেশি হয়। এখন এরা ট্রপিক্যাল (নাতিশীতোষ্ণ) দেশগুলোতে এ উদ্ভিদটি সুপরিচিত। তবে এরা আমাদের দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী আগাছা উদ্ভিদ হিসেবে ঢুকে গেছে। ’
 
দৈর্ঘ্য এবং প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে এ গবেষকের মতামত হলো- এরা উচ্চতায় ৫ থেকে ৬ ফুট লম্বা হয়। তবে এরা খাড়া থাকে না, মাটিতে থাকে। এরা ‘কলোনিয়াল’ অর্থাৎ যেখানে হয় সেখানে প্রচুর পরিমাণে হয়ে থাকে। পুরো জায়গা দখল করে ফেলে এ উদ্ভিদগুলো। বিশেষ করে রাস্তাঘাট, পুকুরের পাড়, জঙ্গল-টিলার আশপাশ প্রভৃতি এলাকায় প্রচুর পরিমাণে জন্মে।  
 
এই উদ্ভিদের পাতা শরীরের বিভিন্ন অংশের কাটাছেড়ায় বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে বলে জানান ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮
বিবিবি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।