ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

মধ্যরাতে ৮০-১০০ কিমি বেগে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ‘ফণী’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩২ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৯
মধ্যরাতে ৮০-১০০ কিমি বেগে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ‘ফণী’

ঢাকা: ভারতের উড়িষ্যায় তাণ্ডব চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে এগোতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে শুক্রবার (৩ মে) মধ্যরাতে। এসময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল।

সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, এই মুহূর্তে ‘ফণী’র অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে সমুদ্রে। এটি ২০০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে। তবে অবস্থান দূরে হওয়ায় এই গতি কমে দুর্বল হয়ে আসছে। গতি আরও কমে উত্তর দিকে অগ্রসর হবে। এখন বাতাসের গতি কোথাও ৬২ কিলোমিটার, কোথাও ৮০, কোথাও ১০০ কিলোমিটার। ফণী বাংলাদেশে আঘাত হানবে মধ্যরাতে। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় এগোতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে দিক থেকে দক্ষিণে বায়ু প্রবাহিত হবে। এতে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারি না। তবে উড়িষ্যায় যে ১৮০-২১০ কিলোমিটার বেগে আঘাত করেছিল সেটা এখন দুর্বল হয়ে গেছে। মধ্যরাতে বাংলাদেশে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হতে পারে এবং আগামীকালও (শনিবার) দেশে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকতে পারে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল বলেন, ‘ফণী’র সতর্কতা জারির পর ১৯টি জেলায় জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিকেল পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে। সন্ধ্যার পর পর্যন্ত এ সংখ্যা ১৫ থেকে ১৮ লাখে পৌঁছানোর আশাবাদ আমাদের। আমাদের টার্গেট ২১ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা। তবে ঝড়ের গতি কমে গেলে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ কম আসবে। ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তারপরও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনে আরও আশ্রয়কেন্দ্র করা, সেটাও হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রাণহানির মতো কোনো দুঃসংবাদ পাওয়া যায়নি।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, দুর্যোগপূর্ণ এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। নৌবাহিনীর ৩০টি জাহাজ প্রস্তুত আছে। আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কাজ করছে। সব মিলিয়ে দুর্যোগ পরিস্থিতির জন্য যে প্রস্তুতি আছে, আশা করি আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারবো। কোনো প্রাণহানি হবে না বলে আমাদের প্রত্যাশা।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আঘাত যেহেতু মধ্যরাতে হানবে, তখন কিন্তু মানুষ ঘুমিয়ে থাকবে। তাই আমরা আহ্বান জানিয়েছে সবাই যেন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসেন। আমরা সবাই মিলে পুরোপুরি প্রস্তুত আছি, আশা করছি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবো।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৯
এসকে/এইচএ/

** বাংলাদেশের পুরো আকাশ ছেয়ে ফেলবে ‘ফণী’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।