ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

সকালে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ‘ফণী’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৮ ঘণ্টা, মে ৪, ২০১৯
সকালে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ‘ফণী’ উড়িষ্যায় ফণীর তাণ্ডব/ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র মূল অংশ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে শনিবার (৪ মে)। সকাল নাগাদ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় দিক দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে সাম্প্রতিককালের অন্যতম ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়। একই সঙ্গে ফণীর কেন্দ্র থেকে ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার থেকে কমে ৯০ কিলোমিটার হয়েছে। 

শুক্রবার (৩ মে) দিনগত মধ্যরাতের পর বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জারি করা বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে এমনটাই।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে ভারতের উপকূলীয় উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে ফণী।



ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বর্তমান স্থান থেকে স্থলভাগের ওপর দিয়ে আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে সরে বাংলাদেশ অংশে পৌঁছাবে ফণী। এর অগ্রভাগের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানের আকাশ মেঘলা, দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে।

একই সঙ্গে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত ফণীর কেন্দ্র থেকে ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। এই বাতাস দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগ সম্পন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল।  

সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ কমে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার হয়েছে যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।  

তবে সমুদ্র বন্দরগুলোতে সতর্কতা সংকেতে এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়নি আবহাওয়া অফিস। এখনও মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।  

এক সময় মধ্যরাতে বাংলাদেশে আঘাত হানার কথা বলা হলেও ভারতের পুরী থেকে কিছুটা দিক পরিবর্তন করে স্থলপথে খড়গপুর দিয়ে ঢোকায় এগোতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আবাহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ফণী। ফণী ভারতের উড়িষ্যা থেকে বাংলাদেশের দিকে ঘণ্টায় ২১ কিলোমিতার বেগে ধেয়ে আসছে বলেও জানান। একই সঙ্গে স্থলভাগের ওপর দিয়ে আসায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা কম বলেও মন্তব্য করেন এই আবহাওয়াবিদ।  

এদিকে ভোর হওয়ার আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে দেশটিতে গত দুই দশকের মধ্যে আসা সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণী।  

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৯
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।