ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বায়ুদূষণ রোধে আইনের প্রয়োগের উপর গুরুত্ব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৯
বায়ুদূষণ রোধে আইনের প্রয়োগের উপর গুরুত্ব সেমিনারে উপস্থিত অতিথিরা/ছবি- শাকিল

ঢাকা: বায়ুদূষণ রোধে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং আইনের প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শনিবার (০১ জুন) আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এ আহ্বান জানান। সিরডাপ মিলনায়তনে বায়ুদূষণ, করণীয় ও পদক্ষেপ- শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

 

সেমিনারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটাকে দায়ী করা হচ্ছে। অবশ্যই ইটভাটা দায়ী, ইটভাটা বেড়েছে। এর কারণ দেশে উন্নয়ন হয়েছে ইটের চাহিদা বাড়ছে। এখন গ্রামেও টিনের ঘর পাওয়া যায় না, কুঁড়েঘর তো পাওয়া যায়-ই না। এ কারণে ইটের চাহিদা বেড়েছে, যেহেতু পাথর নেই তাই নির্মাণ কাজে ইটের ব্যবহার বেশি হয়। আমরা যখন এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার করছি তখন নিজেই নিজের বাতাস দূষণের আমন্ত্রণ করছি।  

নিজের জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমি বাসায় এসি ব্যবহার করি না, আমি তো ভালোই আছি। যখন মন্ত্রী ছিলাম তখন আমার অফিসে এসি ব্যবহার করিনি, জানালা খুলে রাখতাম, ফ্যানই যথেষ্ট। তবে যখন বিদেশি অতিথিরা আসতেন তখন এসি ব্যবহার হতো।  

বায়ুদূষণ রোধে জনসচেতনতা জরুরি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, কৃষকরা রাসায়নিক সার ব্যবহার করে, এখন সরকার জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। আসলে এখন টিআর ও কাবিখাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তার একটি অংশ সোলার প্যানেলে ব্যায়ের নির্দেশ আছে। মানুষকে সোলারে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এ উদ্যোগ।  

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক বলেন, বায়ুদূষণ রোধে চীন, নিউজিল্যান্ড যে পথে হাঁটছে আমাদেরকেও সেই পথে হাঁটতে হবে। বায়ুদূষণ আজ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না সারা পৃথিবীর সমস্যা। এ দূষণ রোধে সর্বস্তরের মানুষকেও সচেতন হতে হবে। আমরা সন্তানের জন্য সম্পদ রেখে যাবো, কিন্তু মানুষের মূল যে সম্পদ সেটা হচ্ছে সুন্দর পরিবেশ, সেটা আমরা রেখে যাই না। আসুন আমরা সন্তানদের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ রেখে যাই।  

দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে বক্তারা বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা, নির্মাণ কাজ উন্মুক্তভাবে না করা, পানি না ছিটিয়ে রাতে রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া, ময়লা-আবর্জনা আগুন দিয়ে পুঁড়িয়ে দেওয়া, অতিরিক্ত এসি ব্যবহার, সরকারের উদ্যোগের বাস্তবায়ন না হওয়া, আইনের প্রয়োগ না হওয়া, পরিবেশ অধিদপ্তরের পর্যাপ্ত লজেস্টিক সাপোর্ট না থাকাসহ বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করেন।  

বক্তারা বলেন, গাড়ির কালো ধোঁয়াও এখন বন্ধ হয়নি। রাতে রাস্তা ঝাড়ু দেওয়ার সময় ধুলা উড়ে বায়ুদূষণ করে। নির্মাণকাজ উন্মুক্তভাবে করা হয়, ঠিকাদাররা চুক্তি অনুযায়ী আবরণের মধ্যে কাজ করে না। অপ্রয়োজনীয়ভাবে এসি ব্যবহার হচ্ছে।  

তারা আরও বলেন, বায়ুদূষণ জনিত কারণে ২০১৭ সালে ১ লাখ ২৩ হাজার প্রাণ ঝরেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। উন্নয়ন করতে হবে তবে জীবনরক্ষার জন্য পরিবেশ রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারে পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে জনসচেতনতা তৈরির জন্য ভূমিকার আহ্বান জানান তারা।  

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রাণ গোপাল দত্ত, স্থপতি ইকবাল হাবীব, অধ্যাপক খাদিজা খাতুন, অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন, অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ, সাংবাদিক মনজুরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, জাহিদুজ্জামান প্রমুখ। সেমিনার পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবশে বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৯ 
এসকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।