ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও জোয়ারে উপকূল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা কমেনি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২০
বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও জোয়ারে উপকূল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা কমেনি

ঢাকা: বৃষ্টিপাতের তীব্রতা কিছুটা কমে এসেছে। ফলে অতিভারী থেকে ভারী বর্ষণের আভাস দিচ্ছে প্রকৃতি।

তবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায়, আগের মতোই শঙ্কা রয়েছে জোয়ারের পানিতে উপকূল ভেসে যাওয়ার। এছাড়া সমুদ্র ও নৌবন্দরে রয়েছে সতর্ক সংকেতও।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানান, ভারতের বিহার-গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে ভারতের মধ্যপ্রদেশের মধ্যভাগ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়াে হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মােংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নােয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভােলা, বরিশাল, পিরােজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে।

গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই অধিক উচ্চতার জোয়ার দেখা দিচ্ছে। ফলে উপকূলীয় জেলাগুলোর বিভিন্ন নদীর পানিও শহরে প্রবেশ করছে। এতে নতুন করে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে যশাের, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নােয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়াে হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরগুলোকে ২ (দুই) নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়াে হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদী বন্দরগুলোকে ১ (এক) নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অন্য এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিহার ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয়-পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ফলে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের প্রবল অবস্থায় বিরাজমান।

এ অবস্থায় শনিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা নাগাদ রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের এ প্রবণতা সোমবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত থাকবে। তবে সপ্তাহের শেষের দিকে বর্ষণ আরও বাড়বে।

২১ আগস্ট দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সাতক্ষীরায় ৭০ মিলিমিটার। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৩২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০ মিলিমিটার।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২০
ইইউডি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।