ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

টানা শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চল 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
টানা শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চল  টানা শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চল। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: টানা শৈত্যপ্রবাহের ধকল কাটছে না গোটা উত্তরাঞ্চলে। বিশেষ করে উত্তরের জেলা রাজশাহীতে গত দুই দিন থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

ফলে মানুষের পাশাপাশি এখন পশু-পাখিরাও শীতে কাবু হয়ে পড়েছে।

তবে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী সপ্তাহ থেকে রাজশাহীসহ সারাদেশের তাপমাত্রাই কিছুটা বাড়তে পারে।

২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। তবে আগামী দুইদিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। এর পরের পাঁচদিন আবার বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৭টার পর থেকে আর তাপমাত্রা কমেনি। ফলে এটিই আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম বলেন গত ৩১ জানুয়ারি থেকে হঠাৎ তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি থেকে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি কমে যায়। গতকাল রোববার রাজশাহীর সর্বনম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া গতকাল এটি দেশেরও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামে ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সেই তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। তবে আজও  রাজশাহীর ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।

এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত রাজশাহীতে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। এরপর সূর্যের দেখা মিলেছে। তবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কারণে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। এতে সূর্যের কিরণ শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় ছিন্নমূল মানুষ গুটিশুটি হয়ে পড়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। ঠাণ্ডায় এরই মধ্যে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কোল্ড ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ নিয়ে আক্রান্ত মানুষ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে প্রধান সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। টানা শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে সাধারণ মানুষগুলোর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসন কম্বল বিতরণ শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন শীতার্ত মানুষরা।

এদিকে, এমন ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী রূপ নিলে রাজশাহীর কৃষিতে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এই সময়টায় এসে কুয়াশার কারণে বরাবরই বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে জমির বোরোতে কোল্ড ইনজুরি ও আলুতে লেটব্লাইট (পচন) দেখা দেয়। তবে পরস্থিতি মোকাবেলায় এবার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর শুরু থেকেই শীতের প্রকোপ। তবে শেষ সময়ে এমন আবহাওয়া রবি শস্যের জন্য কাল হয়ে ওঠে। তাই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্ক রয়েছেন। বর্তমানে জেলার পাশাপাশি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করছেন। ফসলকে নিরাপদ রাখতে কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এছাড়া মোবাইল অ্যাপস ও হট লাইনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টাই কৃষি তথ্য সেবা পাচ্ছেন কৃষকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
এসএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।