ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

উত্তরণ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

করপোরেট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
উত্তরণ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

ঢাকা: উত্তরণ-উন্নত জীবনের লক্ষ্যে প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে শেভরন এবং বাস্তবায়নে রয়েছে সুইসকন্ট্যাক্ট।

 

২০১৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় ২০১৯ শেষ হয় যেখানে দেশের সিলেট অঞ্চলের ১৪০০ যুবককে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।  

২০১৯ এ শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও বড় পরিসরে তিনটি কম্পোনেন্টে উত্তরণ প্রকল্প যাত্রা শুরু করে। প্রথম কম্পোনেন্টে কমিউনিটির যুবাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান, দ্বিতীয় কম্পোনেন্ট সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে ভোলানন্দ উত্তরণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আধুনিকীকরণ এবং সর্বশেষ তৃতীয় কম্পোনেন্টে খুলনা শিপইয়ার্ডের সাথে পার্টনারশিপের মাধ্যমে অ্যাডভান্সড ওয়েল্ডিং প্রশিক্ষণ চালু করে।  

সমাপনী অনুষ্ঠানে উত্তরণ প্রকল্পের সাফল্য এবং কার্যক্রম সম্পর্কে আলোকপাত করা হয় যার মধ্যে দুইটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পার্টনারশিপের মাধ্যমে অর্জিত ফলাফল প্রকল্প পরবর্তীতেও কাজ করে যাবে।

এই মুহূর্তে, বাংলাদশের মোট ৪.৪ মিলিয়ন জনগোষ্ঠি অর্থনৈতিক সক্রিয় রয়েছে এবং আমাদের শ্রমশক্তি প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়ন হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে কর্মরত রয়েছে ৬০.৭ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী। দক্ষতার অভাবে যুবারা দেশে-বিদেশে কাজের সুযোগ পাচ্ছে না যাতে করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়ছে।

অনুষ্ঠানটি ঢাকার শেরাটন হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন।  

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ  নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এরিক এম ওয়াকার উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমি এমন উদ্ভাবনী উপায়ে উত্তরণ প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য সুইসকন্টাক্টকে ধন্যবাদ জানাই। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর তরফ থেকে সার্থকভাবে সামাজিক উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনে সিটি করপোরেশন, খুলনা শিপইয়ার্ড টিটিসির মতো সংস্থাসমূহের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবিদার। ’
 
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত নাসরিন আফরোজ বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি সংস্থার অংশীদারিত্ব এখন আগের চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরণ এনএসডিএ’র সাথে একটি ঘনিষ্ট কার্যকর সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এনএসডিএ’র দিকনির্দেশনার মাধ্যমে এটি ট্রেড প্যাকেজিং-এ দক্ষ জনবলের চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্যাকেজিং ও ফিনিশিংয়ের কাজে দক্ষতার একটি নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে এটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। আমাদের সহযোগিতায় এটি ওয়েল্ডিং ইন্সপেক্টর পেশার জন্য জাতীয় মান তৈরি করেছে। এ প্রচেষ্টাসমূহ প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।

সম্মানিত অতিথি এরিক এম ওয়াকার বলেন- ‘প্রতিষ্ঠান হিসেবে শেভরন বিশ্বাস করে আমরাই আমাদের জনগোষ্টির প্রতিনিধি এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানিক মূলনীতির ভিত্তিতে রয়েছে সেই সামাজিক ব্যবস্থার অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করা। আমরা উত্তরণের একটি অংশ হতে পেরে গর্বিত, যা আমাদের বাংলাদেশ পার্টনারশিপ ইনিশিয়েটিভের একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার উপায় হিসেবে কয়েক বছরব্যাপী বহুমূখী সামাজিক বিনিয়োগ কর্মসূচির অন্তর্ভূক্ত- যা স্থানীয় জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতি আমাদের প্রতিষ্ঠানের মূল অঙ্গিকারেরই অংশ। উত্তরণ বাংলাদেশের দক্ষ জনবলের ঘাটতি পূরণে মানসম্মত কারিগরি শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করে যা নারীসহ অসংখ্য যুবদের সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখেছে।

সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান বলেন, আজ আমরা সবাই উত্তরণ প্রকল্পের অর্জনকে উদযাপন করতে একত্রিত হয়েছি, যার লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের তরুণদের জীবনে পরিবর্তন বয়ে আনা। উত্তরণ ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে এই ৬ বছরে আমরা অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছি। আমরা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে আরও বেশি কিছু পেয়েছি।

শেভরন বিশ্বব্যাপী সমন্বিত জ্বালানি সংস্থাগুলির মধ্যে একটি শীর্ষস্থানীয় নাম, যার ব্যপ্তি জ্বালানি শিল্পের কার্যত প্রতিটি ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে, শেভরন দেশের উত্তর-পূর্বে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করে। শেভরন বাংলাদেশ ব্লক টুয়েলভ, লিমিটেড এবং শেভরন বাংলাদেশ ব্লক থার্টিন অ্যান্ড ফোর্টিন, লিমিটেড (শেভরন বাংলাদেশ) বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের বৃহত্তম উৎপাদক, যা মোট অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদনের ৬০ শতাংশ'র বেশি এবং অভ্যন্তরীণ
ঘনীভূত উৎপাদনের ৮০ শতাংশ'র বেশি। শেভরন বাংলাদেশ তার কর্মএলাকার অধিবাসীদের স্বার্থে কাজ করে, দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব বিনির্মাণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দীর্ঘস্থায়ী সুবিধা নিশ্চিত করে। কর্মএলাকার জনগোষ্ঠীর সামাজিক উন্নয়নে বিনিয়োগের নীতি শেভরনের বিশ্বব্যাপী পরিচালিত ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাংলাদেশে শেভরন ২০০৬ সাল থেকে সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শেভরন বাংলাদেশ তার কর্মএলাকার জনগোষ্ঠীর জীবন মানোন্নয়নে যেসকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় এগুলোর মাধ্যমে জীবিকা সহায়ক কার্যক্রম, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নে মূলত নজর দিয়ে থাকে।  

শেভরন বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই প্রকল্পগুলো পরিচালিত করে থাকে।

উত্তরণ প্রকল্প বাংলাদেশের ঢাকা, সিলেট এবং খুলনা অঞ্চলে কাজ করেছে। প্রকল্পের কার্যকলাপের সাথে সাথে বাংলাদেশের প্যাকেজিং শিল্পের চাহিদা পূরণের জন্য উত্তরণ প্রকল্প বাংলাদেশে প্রথমবারের মত একটি নতুন ট্রেড, “প্যাকেজিং এবং ফিনিশিং অপারেশন” চালু করেছে, যা জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাচাই হবার পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছে।  

পাশাপাশি ওয়েল্ডিং ইন্সপেকশন পেশার সার্টিফিকেশনের জন্য একটি কম্পিটেন্সি স্ট্যান্ডার্ড জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্তৃক যাচাই হবার পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের যুবাদের সফটস্কিল সম্পর্কে জানাতে বাংলায় অ্যান্ড্রয়েড ভিত্তিক অ্যাপ চালু করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২২
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।