ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

আইইউবিতে যাত্রা শুরু হলো মহাবিশ্বের ছবি তোলার উপযোগী টেলিস্কোপের

শিক্ষা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩
আইইউবিতে যাত্রা শুরু হলো মহাবিশ্বের ছবি তোলার উপযোগী টেলিস্কোপের

ঢাকা: ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশে (আইইউবি) যাত্রা শুরু হলো দেশের প্রথম অত্যাধুনিক দুটি টেলিস্কোপের সাহায্যে দূর মহাবিশ্বের ছবি তোলা যায়।  

কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো (ইউঅফটি)-এর কাছ থেকে উপহার হিসেবে এ দুটি ইউনিস্টেলার ইভিস্কোপ ইকুইনক্স টেলিস্কোপ পেয়েছে আইইউবি।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত আইইউবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে টেলিস্কোপ দুটি উন্মোচন করেন স্বানমধন্য লেখক ও পদার্থবিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। একই অনুষ্ঠানে ‘দূরবিন - দূর বিশ্বের নাগরিক’ নামের একটি প্রকল্পেরও উদ্বোধন করা হয়।

অত্যাধুনিক এ টেলিস্কোপ দুটি এই প্রকল্পের অধীনেই ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে প্রাচীন তারাপুঞ্জ’ শীর্ষক একটি বক্তৃতা উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোর ডানলাপ ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর পোস্টডক্টোরাল ফেলো এবং জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. লামীয়া মওলা।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, অনেক তরুণ-তরুণী আমার কাছে জানতে চায় জ্যোতির্বিজ্ঞানী হতে হলে কি করতে হবে। আমি তাদের বলি দেশে ফিজিক্স নিয়ে পড়া শেষ করে বাইরে চলে যেতে। আমি আজকে জেনে অত্যন্ত আনন্দিত যে আইইউবি দেশেই জ্যোতির্বিজ্ঞান পড়ানোর একটা উদ্যোগ নিয়েছে। আইইউবিতে চমৎকার একটা পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ গড়ে উঠছে। আমি আশা করবো এক সময় এখানে একটা জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগও হবে।

ড. লামীয়া মওলা বলেন, আইইউবি এবং ডানলাপ ইনস্টিটিউটকে বিশেষ ধন্যবাদ দূর মহাবিশ্বকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে উৎসাহী ব্যক্তিদের কাছে উন্মুক্ত করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। আমি আশা করবো ভবিষ্যতে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

আইউবির উপাচার্য তানভীর হাসান বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অবজার্ভেশনাল অ্যাস্ট্রনমি রিসার্চ বা পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা শুরু হয় আমাদের আইইউবিতেই, ২০২০ সালে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব শুধু নতুন জ্ঞান তৈরি করা নয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ নতুন জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া এবং সেই জ্ঞানের আনন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়াও একটি অন্যতম দায়িত্ব। এটি আইইউবির কমিউনিটি এনগেজমেন্ট কর্মকৌশলের
সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আইইউবির সহকারী অধ্যাপক, দূরবিন প্রকল্পের সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশের একমাত্র পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. খান আসাদ বলেন, এ ইকুইনক্স টেলিস্কোপ দুটি খুবই হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য। ঢাকার মতো শহর যেখানে বায়ুদূষণ খুব বেশি, সেসব জায়গার জন্য এই টেলিস্কোপ খুবই উপযোগী। এর মাধ্যমে ঢাকার বাইরের দূষণমুক্ত অন্ধকার জায়গা থেকে দূর মহাবিশ্বের অনুজ্জ্বল বস্তুর ছবিও তোলা সম্ভব। এ টেলিস্কোপ দুটিতে কোনো আইপিস নেই। এগুলো দিয়ে শুধু ছবি তোলা যায়, অনেকটা জেমস ওয়েব বা হাবল টেলিস্কোপের মতো, তবে অনেক ছোটে স্কেলে। সুতরাং, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী এবং উৎসাহী ব্যক্তিদের জন্য আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কীভাবে কাজ করেন সেটা জানার একটা সুযোগ তৈরি হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।

মূল অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় আইইউবির ছাদ থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে আকাশের ছবি তোলার সুযোগ দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে আগত শিক্ষার্থী এবং অতিথিদের।

আইইউবি এবং ইউ অফ টি-এর যৌথ উদ্যোগে, দূরবিন প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে ‘সিটিজেন অ্যাস্ট্রনমার’ হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। টেলিস্কোপের ব্যবহার সম্পর্কে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও, প্রকল্পের আওতায় ভবিষ্যতে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এ টেলিস্কোপ দুটি ব্যবহার করে আকাশ পর্যবেক্ষণের আয়োজন করা হবে, যার আয়োজনের দায়িত্বে থাকবেন সিটিজেন অ্যাস্ট্রনমাররা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।