ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ ৬১ ভাগ করপোরেট করদাতা

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ ৬১ ভাগ করপোরেট করদাতা

ঢাকা: চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন দেশের শতকরা ৬১ ভাগ করপোরেট করদাতা।

দেশে মোট ৭৮ হাজার করপোরেট করদাতা শনাক্তকরণ নম্বরধারীর মধ্যে মাত্র ৩০ হাজার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রিটার্ন জমা দিয়েছেন।

তবে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় দুইমাস বাড়ানোর জন্য করপোরেট করদাতারা জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত কমিশনারের কাছে আবেদন করেছেন।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে চালু করা ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদন যাচাইকৃত অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতার কারণে রিটার্ন জমা দিতে বিলম্ব হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন করদাতা।

এছাড়া ছোট আকারের কোম্পানিগুলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট কোম্পানিগুলোকে ফি দিয়েও ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে যাচাইকৃত আর্থিক প্রতিবেদন পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে।

এ অবস্থায় কর আদায়কারীরা দ্রুত সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারি কোষাগারে প্রত্যক্ষ করের সিংহভাগই জমা দেন কর্পোরেট করদাতারা।

এ বিষয়ে একজন সিনিয়র কর কর্মকর্তা বলেন  কর্পোরেট করদাতারা রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। জরিমানা এড়াতে ১৫ মের মধ্যে তাদের কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর ফাঁকি ঠেকানোর জন্য একটি একক অডিট রিপোর্ট নিশ্চিত করতে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে।

এখন পর্যন্ত ২৫৫৭৬টি কোম্পানি ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেম থেকে কোড পেয়েছে, কিন্তু সবগুলো কর-রিটার্ন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।

ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেম বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রয়োজন, যার মধ্যে বেসরকারি সংস্থার অডিট, ঋণ প্রাপ্তি, দাতাদের সহায়তা এবং ট্রেড লাইসেন্স।

আইসিএবি’র সদস্যরা ১০ থেকে ১২ হাজার আর্থিক প্রতিবেদন অডিট করে।

আয়কর আইনে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট (সিএ) অডিট করা আর্থিক প্রতিবেদন দাখিল বাধ্যতামূলক হলেও, জাল ও বানোয়াট বিবরণী জমা দেওয়ার প্রথা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে, যার ফলে কর রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে।

বার্ষিক আয়, ব্যয়, সম্পদ এবং অন্যান্য বিবরণ উল্লেখ করে সব কোম্পানির জন্য আয়কর-রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক।

যদিও ২০১৩ সাল থেকে কর-নিবন্ধিত কোম্পানির পাশাপাশি কর্পোরেট-ট্যাক্স সংগ্রহের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। তবে রিটার্ন-জমা দেওয়ার প্রবণতা কম, যা অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কর্পোরেট-ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সের একটি হতাশাজনক অবস্থা দেখায়।

২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে উপলব্ধ তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনের কম-রেট কর্পোরেট-ট্যাক্স-রিটার্ন জমা দেওয়া বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত রয়েছে।

যাইহোক, গত অর্থবছরে কর্পোরেট টিআইএন-ধারীদের সংখ্যা ১১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে, কিন্তু রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমানে কর্পোরেট টিআইএন ধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজার।

করদাতারা আরও বলছেন, কর্পোরেট-ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সের উচ্চ খরচ, জটিল ম্যানুয়াল প্রক্রিয়া এবং ট্যাক্স রিটার্নসহ বিপুল সংখ্যক কাগজপত্র জমা দেওয়ার ঝামেলা কর রিটার্ন জমা দিতে নিরুৎসাহিত করে।

বর্তমানে, কর্পোরেট করদাতাদের ট্যাক্স বিভাগে এক বছরে ২৬ ধরনের নথি জমা দিতে হয়, বেশিরভাগই ম্যানুয়াল ফর্মে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২২
এসই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কর্পোরেট কর্নার এর সর্বশেষ