প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকা ও জীবনমান উন্নয়নে, প্রেরণা ফাউন্ডেশন ও বেঙ্গল মিট-এর যৌথ প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায়, কার্যকরী বাজার সংযোগের মাধ্যমে সংগ্রহ হবে গবাদি পশু, ভাগ্য বদলাবে সহস্রাধিক খামারি পরিবারের।
শুক্রবার (২৪ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রেরণা ফাউন্ডেশনের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতাধীন, কুষ্টিয়া ও রংপুর অঞ্চলের হাজারেরও বেশি খামারি পরিবারের সামনে এখন উন্মোচিত হয়েছে এক নতুন সম্ভাবনা। বেঙ্গল মিটের সঙ্গে যৌথ পরিকল্পনায়, একটি কার্যকরী ভ্যালু চেইন তৈরি করেছে প্রেরণা ফাউন্ডেশন, যার মাধ্যমে কুষ্টিয়া ও রংপুর অঞ্চলের খামারিদের কাছ থেকে উন্নত মানের গবাদি পশু সংগ্রহ ও সরবরাহ সম্ভব হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে, প্রেরণা ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্প্রতি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
এতে আরও বলা হয়, ‘সেইফ প্রোটিন ফার্মিং’ শীর্ষক এই নতুন প্রকল্পের লক্ষ্য দেশ ব্যাপী প্রেরণা ফাউন্ডেশনের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অধীনে থাকা সহস্রাধিক খামারি পরিবারের জন্য বাড়তি আয়ের সংস্থান তৈরি করা। বাজার ও খামারিদের মধ্যে সংযোগ তৈরির মাধ্যমে একটি মার্কেট লিংকেজ স্থাপন করেছে প্রেরণা ফাউন্ডেশন, যার ফলে খামারিরা তাদের গবাদি পশু সরাসরি বেঙ্গল মিটের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। এই প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদে খামারি পরিবারদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে। এ প্রকল্পের বাস্তবায়নের মাধ্যমে, প্রতিটি খামারি পরিবারের জন্য শিক্ষার মান উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি সহ তাদের ক্ষমতায়নে কাজে করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও এর মাধ্যমে বেঙ্গল মিটের গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ এবং উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন প্রোটিনের সরবরাহ নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে।
প্রেরণা ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডি’র পরিচালক মুবিনা আসাফ বলেন, বিগত কয়েক দশক ধরে গবাদি পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। কীভাবে গবাদি পশু পালন করলে স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ প্রোটিন নিশ্চিত করা যাবে, সে ব্যাপারে আমাদের খামারিরা এখন অনেক বেশি সচেতন। কুষ্টিয়া ও রংপুরের খামারি পরিবারদের এই উদ্যোগে আওতাভুক্ত করার জন্য বেঙ্গল মিটকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সব সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে এ প্রকল্পের পরিধি আরও বিস্তৃত করবো এবং এ ধরনের অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের খামারিদের আর্থিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা অর্জনে সহায়তা করবো।
এ প্রসঙ্গে বেঙ্গল মিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এ মঈন বলেন, বেঙ্গল মিট গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ প্রোটিন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরাপদ প্রোটিনের উত্স হিসেবে আমাদের ব্র্যান্ডের প্রতি গ্রাহকদের আস্থার কথা মাথায় রেখে প্রেরণা ফাউন্ডেশনের প্রকল্পের বেনেফিশিয়ারিদের কাছ থেকে উন্নত মানের গবাদি পশু সংগ্রহের জন্য আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রেরণা ফাউন্ডেশন তাদের বিভিন্ন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য যেসব কাজ করছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। উভয় প্রতিষ্ঠানই যেহেতু খামারিদের টেকসই জীবিকার সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে, তাই আমাদের চিন্তাধারা ও মূল্যবোধও এ ব্যাপারে এক বিন্দুতে মিলেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, আমাদের এই অংশীদারিত্ব আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে, যা সেইফ প্রোটিন ফার্মিং উদ্যোগের অধীনে গবাদি পশু পালনকারীদের উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণকে সহজতর করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেরণা ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডি’র পরিচালক মুবিনা আসাফ এবং এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান এফসিএস। এই অনুষ্ঠানে বেঙ্গল মিটের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ এ মঈন, কোম্পানি সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, সাপ্লাই চেইনের জেনারেল ম্যানেজার কৃষ্ণথা উইজেসুরিয়া এবং অপারেশনসের ম্যানেজার রেজাউল করিম শামীম।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
এনএইচআর