ঢাকা: ‘মীর কাসেম আলী প্রত্যক্ষভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাই তাকে চরম দণ্ড দেওয়া উচিত হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
ফাঁসির রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (২৮ আগস্ট) এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘যে সাক্ষ্য -প্রমাণ আছে তার ভিত্তিতে অন্তত এ অভিযোগে (মুক্তিযোদ্ধা জসিম হত্যা) তাকে সাজা দেওয়া যায় না। তারপরেও যদি আপনারা (আদালত) মনে করেন অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের নিবেদন থাকবে যে, যেহেতু মীর কাসেম আলী সরাসরি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রিন্সিপাল অফেন্ডার হিসাবে জড়িত, এটা প্রমাণ হয়নি। সেহেতু তাকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া আইনগতভাবে উচিত হবে না’।
তিনি আরও বলেন, ‘মীর কাসেম আলী বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেবার ক্ষেত্রে হাসপাতাল করে তিনি সেবা করেছেন। গণমাধ্যমে জড়িত ছিলেন। এটা তার সামাজিক কর্মকাণ্ড। তিনি তদন্ত চলা অবস্থায় বিদেশ গিয়ে ফিরে এসেছেন। কারণ, তিনি জড়িত ছিলেন না। তাই তার মনে কোনো সন্দেহ ছিলো না। তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকায় তাকে চরম দণ্ড তথা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত হবে না’।
শুনানি শেষে আগামী মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) আদেশের দিন ধার্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
আসামিপক্ষে খন্দকার মাহবুব এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ০৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। রায়ে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে হত্যা-গণহত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল হোতা মীর কাসেম আলীর।
গত ০৬ জুন ২৪৪ পৃষ্ঠার পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। গত ১৯ জুন ৬৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাস ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আরজি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে আলবদর বাহিনীর তৃতীয় এই শীর্ষনেতা।
রিভিউ আবেদনে সর্বোচ্চ সাজার বিরুদ্ধে মোট ১৪টি যুক্তি দেখানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর