বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের খাস কামরায় বেলা আড়াইটা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জবানবন্দি শেষে এজালাস কক্ষ থেকে কোর্ট হাজতে নেওয়ার পথে ছবি তুলতে গেলে অশ্রাব্য ভাষায় তিনি সাংবাদিকদের গালাগালি করেন।
পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন শাখা সূত্রে জানা যায়, মজনু নিজেকে ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ হিসেবে স্বীকার করেছেন। এর আগে পুলিশের কাছে দেয়া তথ্যের অনুরূপ কথাই বলেছেন।
সূত্রে জানা গেছে, মজনু বলেছেন তার কোনো স্থায়ী বাসস্থান নেই। ভবঘুরে অবস্থায়ই তিনি থাকেন। ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের আগে তিনি বহুবার মানসিক প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক ও ভাসমান নারীদের ধর্ষণ করেছেন।
গত ৯ জানুয়ারি এই মামলায় মজনুকে ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠান আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী। সেই রিমান্ড শেষ হওয়ার একদিন আগেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক আদালতে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। সেই আবেদন মঞ্জুর করার পর তাকে বিচারকের খাসকামরায় নিয়ে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ধর্ষণের শিকার ঢাবি ছাত্রী। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন আরা তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। ওই ছাত্রী সেদিন বিচারকের কছে ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা দেন।
গত ৭ জানুয়ারি রাতে মজনুকে গ্রেফতার করে র্যাবের একটি টিম। পরে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে দেখিয়ে ধর্ষককে শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোনসহ খোয়া যাওয়া সামগ্রী জব্দ করা হয়।
পরদিন ৮ জানুয়ারি দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। ঢাকায় আসার পর বিভিন্ন রেল স্টেশনে কিংবা এর আশপাশে থাকতো। সে একজন মাদকাসক্ত। তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হযে যায়। ঢাকায় এসে সে প্রতিবন্ধী ও নারী ভিক্ষুকদের ধর্ষণ করতো বলে জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছে।
গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুর্মিটোলা বাস স্টপেজে ধর্ষণের শিকার হন ঢাবি ছাত্রী। ধর্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
কেআই/এজে