চট্টগ্রাম থেকে : শ্রেয়াস আয়ারকে ফেরানোর পর বেশ লম্বা সময় করতে হলো অপেক্ষা। ভারত অলআউট হলো চারশ রান ছাড়িয়ে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪০৪ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা। জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় দিনশেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করেছে বাংলাদেশ। ফলো-অন এড়াতে এখনও ৭২ রান দরকার স্বাগতিকদের।
ইনিংসের একদম প্রথম বলেই আউট হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। মোহাম্মদ সিরাজের অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরের বল শান্তর ব্যাটে লাগলে উইকেটের পেছনে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরেন ঋষভ পন্থ। বাংলাদেশের ১৪তম উদ্বোধনী ব্যাটার হিসেবে টেস্টে গোল্ডেন ডাক মারেন শান্ত।
এরপর ক্রিজে এসে ইয়াসির আলিও থাকতে পারেননি। ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি পাওয়া এই ব্যাটার ১৭ বলে করেছেন ৪ রান। উমেশ যাদবের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। লাঞ্চের আগে লিটনের ইনিংসও আশা দেখাচ্ছিল বেশ। উমেশ যাদবের ওভারে টানা তিন চার মেরেছিলেন তিনি। সবগুলো শটই ছিল দৃষ্টনন্দন।
কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে সিরাজের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান লিটন। পরের বলেই বোল্ড হন। ডিফেন্ড করতে গেলে বল ব্যাটে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ৩০ বলে ৫ চারে ২৪ রান করেন লিটন। এরপর সাকিব আল হাসান ধৈর্য ধরেছিলেন বেশ কিছুক্ষণ।
কিন্তু পরে তিনিও আউট হন উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে। কুলদ্বীপ যাদবের টার্ন করা বল ব্যাটে লেগে প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো কোহলির হাতে ক্যাচ যায়। ২৫ বলে ৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান সাকিব। এরপর নুরুল হাসান সোহান শর্ট লেগে দাঁড়ানো শুভমন গিলের হাতে ক্যাচ দেন যাদবের বলে। ২২ বলে ১৬ রান করেন এই ব্যাটার।
অনেক্ষণ ধরে ক্রিজে থাকা মুশফিকুর রহিমও বিদায় নেন এরপর। ৫৮ বলে ৩ চারে ২৮ রান করেন তিনি। তাইজুল ইসলামও ৪ বলে ০ রান করে বোল্ড হয়ে যান যাদবের বলে। দিনশেষে বাংলাদেশের হয়ে অপরাজিত আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও এবাদত হোসেন। ৩৫ বলে ১৫ রান করে মিরাজ ও ২৬ বলে ১৩ রান করে এবাদত।
৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে মাঠে নামে ভারত। স্পিন দিয়ে বোলিংয়ের শুরু করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথম ওভার করেন আগের দিনের সবচেয়ে সফল বোলার তাইজুল ইসলাম। কয়েক ওভার পরই আরেক প্রান্তের বোলার এবাদত হোসেন তৈরি করেন সুযোগও। তার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন আয়ার।
পঞ্চমবারের মতো জীবন পান তিনি। এবার অবশ্য বেশিক্ষণ বাঁচতে পারেননি। গতকাল এবাদতের বল স্টাম্পে লেগেও বেলস পড়েনি, আজ ক্যাচ ফেলেছেন লিটন। শেষ অবধি আয়ারের স্টাম্প উপড়ে তাকে আউট করেন এবাদত। ১০ চারে ১৯২ বলে ৮৬ রান করে আউট হয়ে যান ভারতীয় ব্যাটার।
এরপরই খুঁটি গেড়ে বসেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও কুলদ্বীপ যাদব। অষ্টম উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৯২ রান। অবশেষে তাদের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অশ্বিন তার বলে এগিয়ে আসলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন। ২ চার ও ছক্কায় ২৬ বলে ১৪ রান করেন অশ্বিন।
সঙ্গী ফিরে যাওয়ার পর যাদবও ফিরে যান দ্রুতই। তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। ৫ চারে ১১৪ বলে করেন ৪০ রান। পরে দুই ছক্কায় ১০ বলে ১৫ রান করেন উমেশ যাদবও।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ৪৬ ওভারে ১০ মেডেনসহ ১৩৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল, ৩১ ওভার ৫ বল হাত ঘুরিয়ে ৬ মেডেনসহ ১১২ রান দিয়ে সমান উইকেট নিয়েছেন মিরাজও। এবাদত ও খালেদ পেয়েছেন এক উইকেট করে। দ্বিতীয় দিনে বল না করা সাকিব ১২ ওভারে ২৬ রান দিয়ে থেকেছেন উইকেটশূন্য।
বাংলাদেশ সময় : ১৬৫৪ ঘণ্টা, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২
এমএইচবি