ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

আফগানিস্তানের সামনে রানের পাহাড় দাঁড় করাচ্ছে বাংলাদেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
আফগানিস্তানের সামনে রানের পাহাড় দাঁড় করাচ্ছে বাংলাদেশ ছবি: শোয়েব মিথুন

সকালের শুরু হয়েছিল হতাশায়। ২০ রানের ভেতরই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ হয়ে যায় অলআউট।

এরপর বোলাররা দারুণভাবে সামাল দেন সব, আফগানিস্তানকে করে অলআউট। ফলো অনে পড়লেও সেটি করায়নি স্বাগতিকরা। এখন তাদের সামনে বড় লক্ষ্য দেওয়ার পথে বাংলাদেশ।  

মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। দ্বিতীয় দিন শেষে আফগানিস্তানের চেয়ে ৩৭০ রানে এগিয়ে আছে স্বাগতিকরা। এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ১৪৬ রানে থামে আফগানদের প্রথম ইনিংস। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করে দ্বিতীয় দিন শেষ করে লিটন দাসের দল।  

বাংলাদেশ দিন শুরু করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রান নিয়ে। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ দুজনেই ছিলেন হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি। কিন্তু কেউই করতে পারেননি সেটি।  

প্রথমে আউট হন মিরাজ। ৮ চারে ৮০ বলে ৪৮ রান করে আউট হন তিনি। ইয়ামিন আহমেদ জাইয়ের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে আমির হামজা হোতাকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মিরাজ। এরপরের লড়াইটা ছিল মুশফিকুর রহিমের জন্য।  

কিন্তু এই ব্যাটারও পারেননি টিকে থাকতে। তার ব্যাটের কানায় লেগে বল স্লিপে গেলে আউট হয়ে যান নিজাত মাসুদের বলে। ৪ চারে ৭৬ বলে ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।  

মুশফিকের বিদায়ের পর বাংলাদেশের অলআউট হওয়া ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। টেল-এন্ডাররা বেশিক্ষণ থাকতেও পারেননি। ৭ বলে ২ রান করে তাসকিন আহমেদ ও ১১ বলে ৬ রান করে শরিফুল কিছুক্ষণ চেষ্টা করেন।

কিন্তু দ্বিতীয় দিনে ২০ রানের ভেতরই অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। আফগানিস্তানের পক্ষে ১৬ ওভারে ২ মেডেনসহ ৭৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন মাসুদ। ১৬৭তম বোলার ও আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে অভিষেকেই ফাইফার নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি।

নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভালো করতে পারেনি আফগানিস্তান। শুরুতে ইবারিহম জাদরানের ক্যাচ অবশ্য ছেড়েছিলেন লিটন দাস। কিন্তু জীবন পেয়েও তিনি ক্রিজে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৭ বলে ৬ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে উইকেটের পেছনে লিটনের হাতেই ক্যাচ দেন ইবরাহিম।  

আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার আব্দুল মালিককে আউট করেন এবাদত হোসেন। তৃতীয় স্লিপে দাঁড়ানো জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২১ বলে ১৭ রান আসে এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে। রহমত শাহকেও ফেরান এবাদত। শর্ট বলে শট খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে দাঁড়ানো তাসকিনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৮ বলে করেন ৯ রান।  

আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শহিদীকে আবার আউট করেন শরিফুল। ১৬ বলে ৯ রান করা এই ব্যাটারের ক্যাচ ঝাঁপিয়ে ধরেন মিরাজ। এরপর বেশ ভালো একটা জুটিই গড়েছিলেন নাসির জামাল ও আফসার জাজাই। এবার বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।  

৬ চারে ৪৩ বলে ৩৫ রান করা নাসির জামালকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। সঙ্গীর বিদায়ের পর জুটির আরেক কাণ্ডারি আফসারও টিকে থাকতে পারেননি। ৬ চারে ৪০ বলে ৩৬ রান করে এবাদতের বলে শরিফুলের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। আমির হামজাকে আউট করে নিজের চতুর্থ শিকার করেন এবাদত।  

উইকেট পেয়েছেন তাইজুল ইসলামও। তিন বলে কোনো রান করার আগেই ইয়ামিন আহমেদজাই স্টাম্পিং হন। এরপর করিম জানাত ও নিজাতউল্লাহ মাসুদের ব্যাটে ভরসা রেখে চা বিরতিতে যায় সফরকারীরা। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে তিন ওভারের ভেতরই অলআউট হয়ে যায় আফগানরা। ১০ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে চার উইকেট নেন এবাদত। দুটি করে উইকেট পান তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।  

২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া মাহমুদুল হাসান জয় ইনিংস লম্বা করতে পারেননি এবার। ১৩ বলে ১৭ রান করে আমির হামজা হোতাকের বলে ইবরাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ তোলে দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান জয়।  

এরপর জাকির হাসানের সঙ্গী হন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের জুটিতে দ্রুতগতিতে রান আসে। টানা চারটি চার মারেন শান্ত। মাঝে একবার আম্পায়ার্স কলে বেঁচেও যান তিনি। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েও দিনশেষে অপরাজিত আছেন জাকির ও শান্ত। ৬ চারে ৬৩ বলে ৫৪ রান জাকিরের, ৬৪ বলে ৫৪ রান করেছেন শান্ত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
এমএইচবি/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।