ঢাকা: ভারত-পাকিস্তান মানেই উত্তেজনা ও চাপের দ্বৈরথ। এই দুই দলের ম্যাচ শুধু দু’টি দলের খেলাই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে যায় দুই দেশের রাজনীতি, হিন্দু-মুসলমান পরিচয়ও চলে আসে সামনের কাতারে।
এই ম্যাচ যতটা না খেলা তার চেয়ে বেশি আত্মমর্যাদার লড়াই। ভারত যদি পাকিস্তানের কাছে হারে তাহলে যেন দেশটাই হেরে যায়। একইভাবে পাকিস্তানের হারে পরাজিত হয় তার দেশ। খেলা তো খেলাই। এর সঙ্গে আবার রাজনীতি কেন আর এত উত্তেজনাই বা কেন।
এ রকম উত্তেজনার ম্যাচ নিয়ে দুই দলের অধিনায়ক ও খেলোয়াড়দের বক্তব্য শুনলে মনে হবে ওপরে যেসব কথা বলা হয়েছে তার সবই ফালতু ও অর্থহীন। দুই দলের একাধিক সংবাদ সম্মেলন ও ওপেন মিডিয়া সেশনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এমনটাই মনে হয়েছে এই প্রতিবেদকের।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনির কাছে শুধু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আলাদা কোনো তাৎপর্য নেই। আর ১০টি ম্যাচের মতো একটি ম্যাচ এটি। সুতরাং এই ম্যাচকে ভিন্নভাবে দেখতে নারাজ ধোনি। ভারতীয় অধিনায়কের মতে সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গত টি-২০ বিশ্বকাপে একটি ম্যাচ হেরেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল। তাই সব ম্যাচকেই সমান গুরুত্ব দিতে চান তিনি।
আর পাকিস্তান অধিনায়ক হাফিজের কাছে এই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচই। ভারতকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারলে দারুণ একটি সূচনা হবে। যা দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে উৎসাহিত করবে, বাড়িয়ে দেবে মনোবল। তাই এই ম্যাচ জিতে বাড়তি সুবিধা নিতে চান তিনি।
এশিয়া কাপে সর্বশেষ দেখায় পাকিস্তানের কাছে হেরেছিলো ভারত। তাই ভারতীয় দল পাকিস্তানের ম্যাচটিকে চাপের ম্যাচ, উত্তেজনার ম্যাচ বলে স্বীকার করে নিলেও এটিকে আলাদা গুরুত্ব দিতে নারাজ। মূলত পাকিস্তানকে মনস্তাত্ত্বিক সুবিধা না দিতেই ভারতীয় অধিনায়কের এই কৌশল।
সর্বশেষ ম্যাচের ফলাফলের কারণে ভারত অধিনায়কের যখন এই কৌশল তখন পাকিস্তান অধিনায়কও কম যান না। মোহাম্মদ হাফিজ ওই ম্যাচে বিজয়ী হওয়ার সুবিধাটি মনস্তাত্ত্বিকভাবে কাজে লাগাতে চান। এ কারণে এই ম্যাচ ‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ’ বলে আসছেন বাংলাদেশের মাটিতে পা দেওয়ার পরপরই।
সেই সঙ্গে বাংলাদেশে কন্ডিশনে খেলাটাকে প্লাস পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন হাফিজ।
হাফিজ বলেন, ২০১২ সালে ভারতে খেলতে গিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে করতালি পাইনি। তবে বাংলাদেশে খেলতে এসে সব সময়ই দর্শকদের সাপোর্ট পেয়ে এসেছি।
পাকিস্তান বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচেই ভারতের সঙ্গে জিততে পারেনি। এই প্রসঙ্গ উঠতে বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে বললেন, পরিসংখ্যান তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ওই প্রসঙ্গে একই মন্তব্য ভারতের স্টার ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলিরও। ভারতীয় সহ-অধিনায়কও পরিসংখ্যান আমলে নিতে চান না। সেই সঙ্গে তিনি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে অতিরিক্ত গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, অন্য একটি ম্যাচের সঙ্গেই এই ম্যাচকে তুলনা করি। ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই।
পাকিস্তানী পেস বেলার সোহেল তানভীরের কাছে অবশ্য পাকিস্তান-ভারত খুবই কঠিন ম্যাচ। তানভীর বললেন, আমরা রেকর্ডে বিশ্বাসী নই। নির্দিষ্ট ওই দিনে বিশ্বাসী। ওই দিন যে ভালো খেলবে সে-ই জিতবে।
তবে দুই দলের খেলোয়াড়েরা যাই বলুক না কেন এই ম্যাচের আগেই যে তাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক খেলা শুরু হয়েছে তা তাদের কথাতেই স্পষ্ট।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৪