ঢাকা: পাঠক, নিশ্চয় মনে আছে ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ঘোষণার পর মাশরাফি বিন মর্তুজার কান্নার কথা। ইনজুরির কারণে নির্বাচকরা তাকে দলে রাখার সাহস করেননি সে-সময়।
বুধবার (১৪ জানুয়ারি) অনুশীলনের তৃতীয় দিনে সেন্টার উইকেটে স্লগ ওভারের ব্যাটিং প্র্যাকটিস করছিলেন মাশরাফি। হাঁকাচ্ছিলেন বিশাল বিশাল ছয়, বলের আঘাত থেকে বাঁচতে সংবাদকর্মীরাও সরে গেলেন নিরাপদে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের ব্যাটটিই ভেঙে দফারফা।
ব্যাট ভেঙে যাওয়ায় কিছুটা হতাশই মাশরাফি। অনুশীলনের বিরতিতে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ডাগ আউটে সিনিয়র-জুনিয়র ক’জন সংবাদকর্মীর সঙ্গে আড্ডায় মেতে ওঠেন বিশ্বকাপ দলের ক্যাপ্টেন। সেখানেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জানালেন তার মন খারাপের কথা। ওই ব্যাটটি দিয়েই নাকি ম্যাচ খেলে থাকেন। সেই প্রিয় ব্যাটটিই গেল কিনা ভেঙে! অগত্যা ‘যখের ধন’ হ’য়ে ওঠা ব্যাটটি মেরামত করতে দিয়েছেন। ব্যাট হারিয়ে স্ট্রেইট ব্যাটই যেন হাঁকালেন মাশরাফি: ওই ব্যাটটি ছাড়া খেলবেনই না!
বন্ধুবৎসল, সদালাপী, অকপট আর আবেগী মাশরাফিকেই পাওয়া গেল তার সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়েই। তার কথা শুনে মনে হচ্ছিল, পাড়ার বড় ভাই আর বন্ধুদের সঙ্গেই যেন শীতের অলস দুপুরে কথার ঝাঁপি খুলে বসেছেন নড়াইলের এই সোনার ছেলে। এমনিতেই মাশরাফির চলাফেরায় নেই তারকাসুলভ কোনো ভারিক্কি ভাব। নেই কোনো হামবড়া ঠাটবাট!
মিনিট বিশেকের আড্ডায় বেশ মজার কিছু অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। শোনালেন কৌতুক আর সংবাদ কর্মীদের মধ্যেও পড়লো হাসির রোল।
টাইগারদের প্রয়োজন এমনই এক সেনাপতির, যিনি খারাপ সময়েও ছায়া দিয়ে আগলে রাখতে পারবেন সহযোদ্ধাদের। মাশরাফি থাকলে ইতিবাচকভাবেই পাল্টে যায় টাইগারদের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ। খারাপ সময়েও চাঙ্গা রাখেন ক্রিকেটারদের, তারই নমুনা হয়ে রইল যেন ছোট্ট এই আড্ডা।
এরপর বাংলাদেশের দিলখোলা এ-অধিনায়ক রসিকতা করেই বললেন, ‘দেখবেন দরকার হলে চার-পাঁচ নম্বরেও নেমে যেতে পারি! অবশ্য আপনাদের ঘোর কাটার আগেই আউট হয়ে যাব। ’
মাশরাফি বিন মর্তুজার শরীরী ভাষা আর আচরণই বলে দেয় নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছেন তিনি। ইস! যদি ইনজুরি আক্রান্ত না হতেন তাহলে অধিনায়ক হিসেবে আরো কত সফলতাই না আসতে পারতো মাশরাফির হাত ধরে! এ আক্ষেপটা তো আছেই ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং সমর্থকদের!
বাংলাদেশ সময়:১৮২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫