ঢাকা: আইসিসির অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি হারলেও বাংলাদেশ দলের পারর্ফম্যান্স নিয়ে অখুশি হওয়ার সুযোগ নেই সমর্থকদের। তবে সেই পুরোনো আক্ষেপটাই থাকলো ম্যাচ শেষে ইস আর ২০ থেকে ৩০ টি রান বেশি হতো! তবে সে আক্ষেপ ছাপিয়ে ইনজুরি কাটিয়ে ওপেনার তামিম ইকবালের স্বরুপে ফিরেছেন এটিও এখন সবচেয়ে বড় খবর টাইগারদের জন্যে।
মিসবাহর দলের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয় বেছে নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা যথারীতি ১৬ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে শঙ্কায় টাইগাররা। তবে তামিম ইকবাল এবং মাহমুদ্দলাহ রিয়াদের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং আত্মবিশ্বাসের অনুরণন ছড়িয়ে দিলে টাইগারদের ড্রেসিং রুমে।
দুজনের তৃতীয় উইকেটে ১৯৮ বলে ১৬৮ রানের পার্টানারশিপটায় বলে দিচ্ছে কন্ডিশন নিয়ে না ভেবে নিজেদের সামর্থ্যের উপর আস্থা রাখতে পারলেই লক্ষ্য পৌঁছানো অসম্ভব নয়।
নিজেকে পাল্টে ফেলে ইদানিং টাইগারদের টপ অর্ডারের বড় ভরসায় চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবাল । ১০৯ বলে ৮১ রানের ইনিংসটিতে চার মেরেছেন মাত্র পাঁচটি। ক্রিকেটে যে সিঙ্গেলস এবং ডাবলসের গুরুত্বও বুঝলেন এক সময়ের এই মারকাটারি ব্যাটসম্যান। পুরোদলের জন্যে আশার কথা হচ্ছে নিজের উইকেটের গুরুত্ব্ব বুঝতে পেরেছেন এই বাহাতি ব্যাটসম্যান।
অন্যদিকে মাহমুদ্দল্লাহ রিয়াদের ধারাবাহিক পারর্ফম্যান্সে অনেকটায় নিশ্চিত টিম ম্যানেজম্যান্ট। রান আউটের ফাঁদে পড়ার আগে খেলেছেন ৮৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। তামিমের মতোই তার ব্যাট থেকে এসেছে পাঁচটি বাউন্ডারি।
কিন্তু ছয় রানের ব্যবধানে এই দুই সেট ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আবারো বিপদে পড়ে টাইগাররা। এরপর দলীয় ১৯০ রানের মাথায় মুশফিক আউট হলে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের।
এরপর অবশ্য সাকিব ৩০ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেললেও স্কোর বোর্ডে ২৪৬ রানের বেশি জমা করতে পারেনি টাইগাররা।
২৪৭ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের পেসারদের ঝাঁঝটা ঠিকই টের পেয়েছে পকিস্তানের টপ অর্ডার। আট রানের মধ্যেই বিদায় নিল পাকিস্তানের দুই ওপেনার। রুবেল হোসেন এবং মাশরাফি প্রথম স্পেলেই নিলেন একটি করে উইকেট। দলীয় ৫২ রানে অভিজ্ঞ ইউনুস খানকে ফেরান তাসকিন আহমেদ।
কিন্তু চতুর্থ উইকেটে শোয়েব মাকসুদ এবং হারিস সোহেলের ৫১ রানের পার্টনারশিপ ম্যাচে ফিরিয়ে আনে মিসবাহর দলকে। আস্কিং রান রেটের সঙ্গেই পাল্লা দিয়েই রান তুলেছেন দুই ব্যাটসম্যান। তবে মাহমুদ্দুল্লাহ হারিস সোহেলকে ফিরিয়ে দিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন টাইগারদের।
এরপর শোয়েব মাকসুদ এবং উমর আকমলের ৬৩ রানের পার্টনারশিপে যখন সহজ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল পাকিস্তানকে তখনই আকমলকে ফিরিয়ে দিয়ে পঞ্চম উইকেটে পতন ঘটান মাশরাফি। এরপর দলীয় ২০২ রানে তাসকিন মিসবাহকে বোল্ড করে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে বাংলাদেশকে।
বোলিংয়ে সাকিব আল হাসানের জ্বলে উঠতে না পারাটাই বাংলাদেশ দলের জন্যে বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এদিন। যদিও শহীদ আফ্রিদির উইকেটটি শেষ মুহুর্তে তুলে নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। কিন্তু তা শুধু দলের হারের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে। শোয়েব মাকসুদের অপরাজিত ৯৩ রানের ইনিংসটির কল্যানে ম্যাচটি ছিনিয়ে নিতে পেরেছে পাকিস্তান।
ম্যাচটি হেরছে বাংলাদেশ কিন্তু এই ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসের টনিকটা পুরো টুর্নামেন্টের জন্যে সবচেয়ে বড় পাওয়া।
এদিকে এ ম্যাচকে ঘিরে প্রচুর দর্শক সমাগম দেখা গেছে স্টেডিয়ামে। আর বাঙ্গালি যে ক্রিকেট পাগল জাতী তা আরো একবার দেখা গেলো এ প্রস্তুতি ম্যাচে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৫