ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

স্বপ্ন যখন দেখব, তবে তা বড় হবে না কেন?

তৌহিদুল আলম, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫
স্বপ্ন যখন দেখব, তবে তা বড় হবে না কেন? ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: জানুয়ারির মধ্যভাগে মিরপুরে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে  শুরু হয় টাইগারদের অনুশীলন। প্রতিদিন সে অনুশীলনের সংবাদ সংগ্রহের  জন্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই কাটতো মিরপুর স্টেডিয়ামে।

  একদিন অনুশীলনের বিরতিতে দুপুরের খাওয়ার জন্যে একটি হোটেলে ঢুকে পড়ি। সেখানেই পাশের টেবিলে  আলোচনায় ছিল মাশরাফিদের বিশ্বকাপ মিশন। সে আলোচনায় হঠাৎই বয়স্ক গোছের এক ব্যক্তি বলেই বসলেন ‘টেস্ট ক্রিকেট খেলছে প্রায় ১৫ বছর হতে চলল কিন্তু এখনো টার্গেট করে আফগানিস্তান এবং স্কটল্যান্ডকে, কেন সেমিফাইনাল টার্গেট করে না। ’

সেই  প্রবীন ব্যক্তিটির কথার মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে সে অমর কথাটি ‘মানুষ তার স্বপ্নের চেয়ে বড়। ’ বিশ্বকাপে আফগানদের উড়িয়ে দিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে মাশরাফিরা। কিন্তু এনিয়েও কথা কম হলো না। প্রশ্ন উঠলো আফগানদের সংগে ম্যাচ জিতে কেন ভিক্টরি ল্যাপ দেওয়া লাগবে? কিন্তু সমর্থকদের শুভেচ্ছার জবাব দিয়েছে টাইগাররা, কোন ভুল করেননি বলেই অনেকেই বলছেন।
 
ক্যাপ্টেন মাশরাফিও সোজা জানিয়ে দিয়েছেন, আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ জয় নিয়ে দলের মধ্যে নেই কোনো বাড়তি উচ্ছাস। মাশরাফি ক্রিকেটীয় বাস্তবতা মাথায় রেখেই কথা বলবেন এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু সমর্থকরা যদি স্বপ্নেই দেখবেন তাহলে সেখানে পোলাও খেলেও দোষের কিছু নেই। প্রথম ম্যাচের ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহিমও বোধ হয় সে পথেই হাঁটছেন। তিনিতো এরইমধ্যে বলেই ফেলেছেন, অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সম্ভব।

অবশ্য আশরাফুলের সেঞ্চুরি এবং মাশরাফির দারুণ এক স্পেলে ২০০৫ সালেই সে সময়ের বিশ্বের এক নম্বর দল অজিদের পাঁচ উইকেটে হারিয়েছিল টাইগাররা। সে সুখ স্মৃতিটাই এখন সম্বল।

বড় স্বপ্ন যেহেতু দেখতেই হবে তাহলে চলুন হেঁটে আসি স্বপ্নের পথে। আমাদের স্বপ্নটা অনেকগুলো ‘যদি’ এবং ‘কিন্তু’র উপর নির্ভরশীল।

২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ–অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি যদি বৃষ্টির কারণেই পরিত্যক্ত হয়ে যায়, তাহলে এক পয়েন্ট নিয়ে  পয়েন্ট টেবিলে সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে টাইগাররা। কিংবা ধরুণ  গ্যাবার ভয়ঙ্কর বাউন্সি উইকেটে আবারো বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঘটনটা ঘটিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিলে পুরো হিসেব নিকেশ পাল্টে যাবে। আর সে জয়ের রসদ নিয়েই বাকি ম্যাচগুলো দাপটের সঙ্গে খেলেই টাইগাররা জায়গা করে নিল কোয়ার্টার ফাইনালে।

এবারের বিশ্বকাপের ফরম্যাট হিসেবে নিলে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ফাইনাল পর্যন্ত যেতে জিততে হবে দুইটি ম্যাচ। যদি কোনভাবেই কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তবুও সমস্যা নেই। দুই দলকেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। এবারো যদি একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে কিন্তু  বাংলাদেশের সমর্থকদের আনন্দ ভাসিয়ে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা জায়গা করে নেবে সেমিফাইনালে। এ ক্ষেত্রে  টাইগারদের অনুপ্রেরণা হতে পারে কেনিয়া। কেনিয়াও  সেই ২০০৩  বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলেছিল এভাবেই।

এখানেই কি থামা উচিত হবে? নাহ সেমিফাইনাল পর্যন্ত যখন এসেছি তাহলে আরেক ধাপ এগিয়ে চলুন মেলবোর্নের ফাইনালে। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে মেলবোর্নের ফাইনালে  আবারো অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে  ইতিহাস তৈরী করে ফেলল মাশরাফিরা!

হ্যাঁ পাঠক স্বপ্নটা অনেক বড় কিন্তু এবার হয়তো হবে না? স্বপ্নের উপর নেই কোন নিষেধাজ্ঞা... স্বপ্ন দেখি চলুন... হয়তো একদিন আমরাও...

বাংলাদেশ সময়: ০০১৭ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।