খুলনা থেকে: শেষ দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ তার ষষ্ঠ উইকেট হারালো। আসাদ শফিকের বল তুলে মারতে গিয়ে গত ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ৩৩ রান করে বিদায় নেন অভিষিক্ত সৌম্য সরকার।
পঞ্চম দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করছে টাইগাররা। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং ক্রিজে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। ৭৬ বলে সাকিব তার অর্ধশতকে পৌঁছান।
টাইগারদের লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৯ রান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে ৫২৫ রান তুলেছে।
টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল শতক হাঁকিয়ে বিদায় নেন তামিম ইকবাল। ২৬৪ বল খেলে ১৭টি চার আর ৭টি ছয়ে ডাবল শতক হাঁকিয়ে ২০৬ রানের (২৭৮ বল) মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছেন বাঁহাতি এ ওপেনার। রেকর্ড বইয়ের বেশ কিছু রেকর্ডকে উল্টে দেন তামিম। মোহাম্মদ হাফিজের বলে সরফরাজের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে শেষ হয় তার ইনিংসটি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ সেরা হওয়ার পর প্রথম টেস্টেও জ্বলে উঠেন তামিম। প্রথম দুটি ওয়ানডেতে শতক হাঁকানো এ ড্যাশিং ওপেনার তৃতীয় ওয়ানডেতেও অর্ধশতক হাঁকান।
টেস্ট ম্যাচ হলেও ৭৪.১০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালানো তামিম ব্যক্তিগত ১৮২ রানের মাথায় পরপর দুটি ছয় মারেন। এরপর একটি সিঙ্গেল নেন। কিছুটা বিরতি দিয়ে পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার জুনায়েদ খানের বলে বিশাল এক ছক্কা মেরে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দ্বিশতক হাঁকান। মুশফিকুর রহিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে দ্বিশতক রান পূর্ণ করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
এর আগে প্রথম ইনিংসে টাইগারদের সর্বোচ্চ রানের স্কোরার মুমিনুল হক জুনায়েদ খানের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন। দলীয় ৩৪৫ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে ৫১ বল খেলে দুটি চার আর একটি ছয়ে তিনি ২১ রান করেন।
২৯৬ রানের বড় লিড নিয়েও দুঃশ্চিন্তা নিয়ে দিন শুরু করে সফরকারীরা। ২৩ রান পিছিয়ে থেকে প্রথম টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে আগের দিনের দুই অপরাজিত সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস ব্যাটিংয়ে নামেন।
চতুর্থ দিনের দুটি সেশন খেলে ১৩২ রানে অপরাজিত থাকা ইমরুল কায়েস ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং করে বিদায় নেন। জুলফিকার বাবরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ব্যক্তিগত ১৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন একটি ইনিংস খেলে আউট হন ইমরুল। তামিমের সঙ্গে রেকর্ড ৩১২ রানের জুটি গড়েন তিনি।
আউট হওয়ার আগে বাঁহাতি এ ওপেনার ২৪০ বল মোকাবেলা করেন। পাকিস্তানি বোলারদের মোট ১৯ বার সীমানা ছাড়া করেন তিনি। ১৬টি চারের পাশাপাশি ৩টি ছক্কা হাঁকানো ইমরুলের ব্যাটিং ছিল ৬২.৫০ স্ট্রাইক রেটে গড়া।
তবে, শেষ সেশনে দ্রুতই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিককে হারায় স্বাগতিকরা। ব্যক্তিগত ৪০ রান করে জুনায়েদ খানের বলে এলবি’র ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ। রিয়াদের পর মুশফিকও বিদায় নেন। মোহাম্মদ হাফিজের বলে কোনো রান না করেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন হাতে চোট পাওয়া মুশফিক।
এর আগে খুলনায় চতুর্থ দিনের যে ৫টি উইকেটের পতন হয়, তার সবগুলোই তুলে নেয় স্বাগতিকরা। আর ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল আর ইমরুল কায়েসের দুরন্ত সূচনায় এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড পার্টনারশিপে ভর করে চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ২৭৩ রান।
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের চতুর্থ দিন মহাকাব্যিক দু’টি ইনিংস খেলেছেন তামিম এবং ইমরুল। দু’জনই হাঁকিয়েছেন শতক। ১৩৮ রানে অপরাজিত থেকে তামিম আর ইমরুল ১৩২ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের ব্যাটিংয়ে নামেন। চতুর্থ দিন তামিমের ইনিংসটি ১৮৩ বলে ১৩টি চার আর ৪টি ছয়ে সাজানো ছিল। আর ইমরুল ১৮৫ বল মোকাবেলা করে ১৫টি চার আর ৩টি ছক্কায় সাজান তার ইনিংসটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ০২ মে ২০১৫ আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা
এমআর
** রিয়াদ, মুশফিকের বিদায়
** ড্র’য়ের পথে খুলনা টেস্ট
** মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে ফিরলেন তামিম
** তামিমের ডাবল শতকে এগুচ্ছে টাইগাররা
** ফিরলেন ‘ব্রাডম্যান’ মুমিনুল
** বাড়ছে টাইগারদের লিড
** দ্বিতীয় সেশনে তামিম-মমিনুল
** উইকেটে তামিম-মমিনুল, স্বস্তিতে নেই সফরকারীরা
** ক্যারিয়ার সেরা রান করে ফিরলেন ইমরুল
** তামিম-ইমরুল স্লোগানে মুখরিত গ্যালারি
** ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে তামিম-ইমরুল
** টপকেই গেল পাকিস্তানকে
** পাকিস্তানকে টপকানো সময়ের ব্যাপার
** রেকর্ড গড়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছেন তামিম-ইমরুল
** মাইলফলকের সামনে তামিম-ইমরুল
** কড়া জবাব টাইগারদের