ফতুল্লা থেকে: ফতুল্লা টেস্টের প্রথম দিনে ভারতের কোনো উইকেট পড়েনি। বাংলাদেশ বোলাররা কোনো উইকেট নিতে পারেননি।
প্রথম দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশ দলের কোচ দাবি করেছিলেন, ফতুল্লার যা উইকেট তাতে এক পেসার চার স্পিনারের কম্বিনেশন সঠিক। সাংবাদিকদের কাছ থেকে বাউন্সার নয়, ইনসুইং ইয়র্কারের মতো পাল্টা প্রশ্ন ;‘ তাহলে রুবেল কেন নয় দলে?’
হাথুরুসিংহে ড্রাইভ করতে চাইলেন। কিন্তু তাতে যা হলো,তাকে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড ছাড়া অন্য কিছু মনে হচ্ছে না! কারণ, বাংলাদেশ কোচের জবাব ছিল: রুবেল ইনজুরি থেকে ফিরেছে। এরপর প্র্যাকটিস ম্যাচও খেলেনি। এরকম উইকেটে ওকে বল করতে অনেক কষ্ট করতে হতো। রুবেলকে রাখা হয়েছে মূলত: ওয়ানডে সিরিজের জন্য!
তাহলে আবুল হোসেন রাজু? সেই প্রশ্নটা অবশ্য সরাসরি কেউ করেননি। কারণ হাথুরুসিংহের দাবি, এই উইকেটে এটাই সঠিক কম্বিনেশন!
হাথুরুসিংহের কথা অনুযায়ী যাকে ওয়ানডে সিরিজের জন্য রাখা তিনি কিভাবে টেস্ট দলে! টেলিফোনে প্রশ্নটা করা হয়েছিল বিসিবি’র প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদকে। তার পাল্টা প্রশ্ন ;‘ কে বলেছেন রুবেলকে ওয়ানডের জন্য রাখা হয়েছে!’
কেন? সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ নিজেইতো বলেছেন। কথাটা বলতেই প্রধান নির্বাচকের পাল্টা প্রশ্ন: তাহলে আপনারা তাঁর কাছে জানতে চাইলেন না কেন, রুবেল কিভাবে টেস্ট দলে এলো? আর আমরা তো ওয়ানডে দলই ঘোষনা করিনি। রুবেলকে আমরা টেস্ট দলের জন্যই নির্বাচন করেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ও দলে ছিলো। প্রথম টেস্ট খেলেছে। দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারেনি ইনজুরির কারণে। ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছে বলেই তাকে টেস্ট দলে রাখা হয়েছে। ’
হাথুরুসিংহের যুক্তিকে এক প্রকার উড়িয়ে মাঠের বাইরেই ফেলে দিলেন প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। বুঝতে বাকি থাকলো না বাংলাদেশ কোচের এইসব কথাকে ক্রিকেটীয় যুক্তিতে মানতে পারছেন না প্রধান নির্বাচক। তাই সরাসরি তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলো, ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে যে কম্বিনেশন নিয়ে বাংলাদেশ খেলছে এটাকে কি সঠিক মনে হয় আপনার?
বিস্ময় মেশানো জবাব বেরিয়ে এলো ফারুক আহমেদের কথায়: ‘ সঠিক কম্বিনেশন! এটা কোনো কম্বিনেশন হলো? এক পেসার নিয়ে আপনি টেস্ট খেলছেন! এই উইকেট যদি ফ্ল্যাট উইকেট হয় সেখানে স্পিনার-পেসার কেউ-ই সুবিধা পাবে না। তাছাড়া একজন পেসার নিয়ে খেললে তাঁর উপর কি ধকল যাবে ভাবেন! আমি মনে করি দুই পেসার আর তিন স্পিনারই সঠিক কম্বিনেশন হতো। ’
প্রধান নির্বাচকের মতো অনেকেই বাংলাদেশ দলের এই একাদশকে সঠিক কম্বিনেশন মনে করতে পারছেন না। আর এই কম্বিনেশন নিয়ে ম্যাচ জেতা সম্ভব কি না সাংবাদিকরা এ প্রশ্নটাও করেছিলেন বাংলাদেশ কোচকে। সেই প্রশ্নে রুবেল হোসেনের করা একটা বিজ্ঞাপনের ভাষাকেই মনে করিয়ে দিলেন হাথুরুসিংহে: ‘স্বপ্ন ভাঙবে না। ......। ’ সেই স্বপ্নের কথাটাই শুনিয়েছিলেন, প্রথম দিন শেষে ম্যাচ যেখানে দাঁড়িয়ে সেখান থেকেও ম্যাচ জেতা সম্ভব বাংলাদেশের পক্ষে! দ্বিতীয় দিনে অবশ্য কোনো বল মাঠে গড়ায়নি। হাথুরুসিংহেকেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হয়নি। এখন তিনি কি বলবেন সেটা জানা যায়নি। তবে একটা কথা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, হাথুরুসিংহের এই সব ‘তত্ত্ব’-এ বিশ্বাসী নন প্রধান নির্বাচক। তারপরও একটা প্রশ্ন, এই একাদশে সৌম্যকে যদি দ্বিতীয় পেসার ভাবা হয়, তাহলে তাঁকে দিয়ে প্রথম দিনে মাত্র ২ ওভার বল করানো কেন?
এই প্রশ্নের উত্তর হাথুরুসিংহে নাকি অধিনায়ক মুশফিক কার কাছ থেকে পাওয়া যাবে? মুশফিক অবশ্য ম্যাচ শুরুর পর এখনো সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি। হয়তো ম্যচ শেষেই হবেন। তবে প্রথম দিন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ কোচ যা বলেছেন; তাতে তিনিও যদি একটু পেছন ফিরে তাকান, তাহলে হয়তো দেখবেন ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে তিনি বোল্ড! কারণ, টেস্ট স্কোয়াডে থাকা পেসারকে দলের বাইরে রাখার ব্যাখ্যা দিতে তিনি বলেছেন ঐ বোলারকে মূলত: ওয়ানডে সিরিজের জন্যই ভাবা হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের ওয়ানডে দলই ঘোষণা করা হয়নি এখনো!
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৫
জেএম