মিরপুর থেকে: টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস, তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিমের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে ছিলেন লিটন দাস আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের ৪৩তম ওভারে লিটনকে ফিরিয়ে দেন গ্রায়েম ক্রেমার।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪৪ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ২২৬ রান।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টানা পঞ্চম সিরিজ জয়ী বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ১৫৩ ওয়ানডে খেলা তামিম ইকবাল এবং ৫৮ ওয়ানডে ম্যাচ খেলা ইমরুল কায়েস।
১৪৭ রানের মাথায় ভাঙে দুই দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল আর ইমরুল কায়েসের জুটি। ওয়ানডে দলে ফিরে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ইমরুল কায়েস। ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে জানিয়েছিলেন রানের জন্য ক্ষুধার্ত তিনি। কেনো বলেছিলেন তার প্রমাণ মিলেছে তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে। দলীয় ৩০তম ওভারে সিকান্দার রাজার তৃতীয় বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ইমরুল। ডাউন দ্য উইকেটে বল তুলে মারতে গিয়ে আউট হওয়ার আগে ৯৫ বলে ৬টি চার আর ৪টি ছক্কায় ৭৩ রান করেন তিনি। এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক তুলে নেন গত ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার ইমরুল কায়েস।
ইমরুলের পর দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আউট হয়ে বিদায় নেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। দলীয় ১৭৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৭৩ রান করে তিনিও স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন। গ্রায়েম ক্রেমারের বলে আউট হওয়ার আগে তামিম ৯৮ বলে ৭টি চার আর একটি ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজান। এর আগে ৩২তম ওয়ানডে অর্ধশতক হাঁকান তামিম। মিরপুরে ২০০০ রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেন তিনি। তামিমের আগে নির্দিষ্ট কোনো স্টেডিয়ামে দু’হাজারের বেশি রান করা ব্যাটসম্যানের তালিকায় ছিলেন সনাৎ জয়সুরিয়া, ইনজামাম উল হক, সাঈদ আনোয়ার, কুমার সাঙ্গাকারা, রিকি পন্টিং ও বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান।
দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরুর পর ব্যাটিং ক্রিজে ছিলেন ১৫৮ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মুশফিকুর রহিম এবং ৯ ওয়ানডে খেলা লিটন দাস। আগের দুই ব্যাটসম্যান স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেওয়ার পর ইনিংসের ৩৮তম ওভারে একই কায়দায় বিদায় নেন মুশফিক। ওয়ালারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে তিনটি চারে ২৮ রান।
সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে জাতীয় দলের আদলে গড়া বিসিবি একাদশকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সফর শুরু করে জিম্বাবুয়ে। তবে, প্রথম ম্যাচে সফরকারী দলটিকে ১৪৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারায় টাইগাররা। সকল শঙ্কা দূর করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫৮ রানের জয় পায় মাশরাফি বাহিনী। আর তাতেই ২০তম সিরিজ জয়ের পাশাপাশি দেশের মাটিতে টানা পঞ্চম সিরিজ নিজেদের কাছে রেখে দেয় বাংলাদেশ।
এ ম্যাচ জিততে পারলে টানা দ্বিতীয়বার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ। গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৫-০ তে সিরিজ হেরেছিল সফরকারীরা। মাঝে দেশের মাটিতে গত তিনটি সিরিজে পাকিস্তান (৩-০), ভারত (২-১) ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে (২-১) হারায় মাশরাফি-তামিম-মুশফিক-সাকিবরা। এর আগে ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়েকে টানা দু’বার হোয়াইটওয়াশ করার কীর্তি গড়েছিল টাইগাররা।
একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে এ ম্যাচের আগে পর্যন্ত ৬৬ বার মুখোমুখি হয়। যার মধ্যে ৩৮ ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ; হেরেছে ২৮ ম্যাচে। দেশের মাটিতে ৩৫ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ২৪টিতে, হার ১১টি ম্যাচে। আজকের ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারালে চতুর্থবারের মতো একই প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার কীর্তি গড়বে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে ১৩ ও ১৫ নভেম্বর দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দু’দল। দিবারাত্রির দু’টি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। খেলা শুরু হবে বিকেল ৫টায়।
বাংলাদেশ দল: মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন, আরাফাত সানি, মুস্তাফিজুর রহমান ও আল আমিন।
জিম্বাবুয়ে দল: এলটন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), সিকান্দার রাজা, রেগিস চাকাভা, চামু চিবাবা, ক্রেইগ আরভিন, ম্যালকম ওয়ালার, গ্রায়েম ক্রেমার, শেন উইলিয়ামস, লুক জঙ্গো, টিনাশে পানিয়াঙ্গারা ও মুজারাবানি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ১১ নভেম্বর ২০১৫
এমআর
** স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে টাইগারদের তিন ব্যাটসম্যান
** ৭৩, ৭৩, ১৭৩!
** ইমরুল কায়েসের ১২তম অর্ধশতক
** ইমরুল আউট, মুশফিক ইন
** দুই ওপেনারে এগুচ্ছে টাইগাররা
** উদ্বোধনী জুটিতে শতরান
** ১৫ ওভারে বাংলাদেশ ৬৯/০
** দারুণ শুরু টাইগারদের
** ৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২১/০
** ব্যাটিংয়ে নেমেছেন তামিম-ইমরুল
** টস জিতে ব্যাটিংয়ে টাইগাররা
** এবার টানা দ্বিতীয় হোয়াইটওয়াশের অপেক্ষা